রাজাকার

বাংলা একাডেমির ব্যবহারিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী ‘রাজাকার’ শব্দের অর্থ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা স্বেচ্ছাসেবক নামে পাকিস্তান দখলদার বাহিনীকে সহায়তা করে এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের বিরোধিতা ও ক্ষতিসাধন করে।

‘রাজাকার’ ফারসি শব্দ। এর অর্থ ’স্বেচ্ছাসেবী’। আরবি শব্দ রি’দাকার থেকে মূলত শব্দটির উত্পত্তি।

স্বেচ্ছাসেবী অর্থের এ শব্দটি এখন ব্যবহার হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের বিরোধিতাকারী নৃশংসতার সমার্থক একটি বাহিনী হিসেবে। বাংলাদেশের মানুষ এ নামটি এখন উচ্চারণ করেন ঘৃণার সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধে নিরস্ত্র বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী রাজাকার।

১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের সময় তদানীন্তন হায়দরাবাদের শাসক নিজাম ভারতভুক্ত হতে অনিচ্ছুক থাকায় ভারতের সামরিক বাহিনীতে প্রাথমিক প্রতিরোধের জন্য রাজাকার নামে একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করেন।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য ১৯৭১ সালের মে মাসে হায়দরাবাদের নিজামের অনুকরণে বাংলাদেশের খুলনায় সর্বপ্রথম রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়। খানজাহান আলী রোডে একটি আনসার ক্যাম্পে জামায়াতে ইসলামীর ৯৬ জন কর্মীর সমন্বয়ে দলটির পূর্ব পাকিস্তান শাখার সহকারী আমির মাওলানা এ কে এম ইউসুফ প্রথম রাজাকার বাহিনী গঠন করেন। পরবর্তীকালে দেশের অন্যান্য অংশেও রাজাকার বাহিনী গড়ে তোলা হয়। ১ জুন জেনারেল টিক্কা খান পূর্ব পাকিস্তান রাজাকার অরডিন্যান্স ১৯৭১ জারি করে আনসার বাহিনীকে রাজাকার বাহিনীতে রূপান্তরিত করেন। তবে এর নেতৃত্ব থাকে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের হাতে।

টিক্কা খান সারা দেশে বাধ্যতামূলকভাবে অনেক চোর, ডাকাত ও সমাজবিরোধীকেও রাজাকার বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত করেন। রাজাকাররা পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার শপথ নিত।

কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় রাজাকারের মধ্যে গোলাম আযম, আব্বাস আলী খান, মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদ, মো. কামারুজ্জামান, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, আবদুল কাদের মোল্লা, ফজলুল কাদের চৌধুরী, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর নাম উল্লেখযোগ্য। এঁদের মধ্যে কেউ কেউ তাঁদের কৃতকর্মের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাজা পেয়েছেন।

অভিমত

রাজনৈতিক স্বার্থে সব হচ্ছে

আমি মনে করি, মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়াটা বর্তমান সরকারের একটি ভুল উদ্যোগ। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে কারা বিবেচিত হবেন, তা প্রথম নির্ধারিত হয় ১৯৭২ সালে। সরকারের উচিত ওই নির্দেশনা অনুসরণ করে ...

রাজনৈতিক স্বার্থে সব হচ্ছে

একাত্তরের গণহত্যা

একটি বাড়িতেই ব্রাশফায়ার করে ১৮ জনকে হত্যা

‘ভোররাতের কিছু আগে। অন্ধকার ফিকে হয়ে আসতে শুরু করেছে। লাইন দিয়ে গ্রামে ঢুকতে থাকে পাকিস্তানি বাহিনী। মেশিনগানের সাথে দুই চাকা দিয়ে টেনে আনে কামান। ভোরের আলো ফুটে ওঠার আগেই শুরু হয় গুলি।

একটি বাড়িতেই ব্রাশফায়ার করে ১৮ জনকে হত্যা

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বড় কাজ ও গবেষণা নেই

দেড় যুগ আগে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে কোনো দলিল বা ইতিহাসবিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশ করেনি মন্ত্রণালয়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরার জন্য মন্ত্রণালয়ের ...

মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বড় কাজ ও গবেষণা নেই

তরুণ চোখে মুক্তিযুদ্ধ

কিবরিয়ার দুই পা উড়ে গেল

১৯৭১ সালে আমি ২৮ দিনের ট্রেনিং শেষ করি। লালমনিরহাট সীমান্তবর্তী ভারতের গিতালদহ পুরোনো রেলস্টেশন। তার পাশে আমরা ২০০ মুক্তিযোদ্ধা ভারতীয় কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন উইলিয়ামের নেতৃত্ব তাঁবু গেড়ে যুদ্ধে রত ...

কিবরিয়ার দুই পা উড়ে গেল

২৪ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

মুক্তিযোদ্ধাদের চালনা বন্দরে অভিযান

মুক্তিবাহিনীর নৌ কমান্ডোরা ২৪ সেপ্টেম্বর চালনা বন্দরে মাইন বিস্ফোরণ ঘটিয়ে একটি বিদেশি জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত করেন। জাহাজটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে খাদ্যশস্য নিয়ে এসেছিল।

মুক্তিযোদ্ধাদের চালনা বন্দরে অভিযান
বিজ্ঞাপন

মহেন্দ্র সর্দার ও মৈলী মাঈ

মহেন্দ্র সর্দার নেই। মারা গেছেন। তার সাঁওতাল কম্যুনিটির কোনো পরিবারই নেই এখন পঞ্চগড়ের সীমান্ত লাগোয়া নালাগঞ্জ গ্রামটিতে। কিন্তু এক সময় ছিল, সেই ’৭১-এ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়।

মহেন্দ্র সর্দার ও মৈলী মাঈ

বজলুল হক

মুক্তিযুদ্ধের সময় ঘাতক পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও এই দেশের কিছু রাজাকার চিকিৎসক বজলুল হককে বলেছিল তাদের সঙ্গে হাত মেলাতে। কুখ্যাত শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল তাঁকে।

বজলুল হক

’৭১: রণাঙ্গনে

‘যারা বেঁচে আছ, প্রতিশোধ নাও’

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক চলছিল বর্বর ইয়াহিয়া খানের। বাংলার নিরীহ জনগণ জানত না অন্ধকারে পাকিস্তানি হায়েনারা এত রক্ত পান করবে। ২৫ মার্চ রাতে মানুষ যখন গভীর নিদ্রায় ...

‘যারা বেঁচে আছ, প্রতিশোধ নাও’

স্বীকৃতি পাইনি আজও

একাত্তরের উত্তাল দিন। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। চট্টগ্রাম শহর থেকে দলে দলে তরুণ যুবকেরা চলে যাচ্ছে যুদ্ধে। চট্টগ্রাম শহরের আন্দরকিল্লার রাজাপুকুর লেনের আদিবাসী দুই ভাই স্থানীয় মুজিব বাহিনীর ...

স্বীকৃতি পাইনি আজও

‘বাংলাদেশ যুদ্ধের বন্দীরা’: যে যুদ্ধের শেষ নেই

যুদ্ধের মধ্যে একজন সৈনিকের সামনে চারটি সম্ভাবনা থাকে: অক্ষত অবস্থায় জয়, আহত হওয়া, রণাঙ্গনে মৃত্যুবরণ এবং যুদ্ধবন্দী হওয়া। ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন অনিল আথালে’র ভাগ্যে শেষেরটিই বরাদ্দ ছিল।

‘বাংলাদেশ যুদ্ধের বন্দীরা’: যে যুদ্ধের শেষ নেই

মামার মুখে শোনা একটি অভূতপূর্ব ঘটনা

মামা মো. নূরুল আলমের মুখে শোনা ও ডায়েরিতে পাওয়া মুক্তিযুদ্ধের প্রতিটি দিনের ঘটনা অত্যন্ত মূল্যবান। ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ থেকে মামা এই টুকরো টুকরো ঘটনা লিপিবদ্ধ করেন। কিন্তু যে ঘটনাটা না বললেই নয় সেটা এখন ...

মামার মুখে শোনা একটি অভূতপূর্ব ঘটনা

সদ্যোজাত সন্তানকে ফেলে মা চলে গেলেন

বাবা নির্মলেন্দু বিশ্বাসের কাছে মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনা শুনেছি। ১৯৭১ সালে আমার ঠাকুরমার বয়স তখন ৪০ বছর। ১৯৭১ সালে যখন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়, তখন তাঁর পরিবারকে রক্ষা করার জন্য পাশের একটি গ্রামে পাঠিয়ে ...

সদ্যোজাত সন্তানকে ফেলে মা চলে গেলেন
বিজ্ঞাপন

পশুর নদীর তীরে

পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের সময় মংলার এক রাজাকার ছিল হাসেম গাজী। সে ছিল এমন নিকৃষ্ট, যা জানোয়ার বা পশুর মতো। তার ছেলে হুমায়ুন। আর সেখানকার এক শ্রমিক ইদ্রিস আলীর খোদেজা নামের এক মেয়ে ছিল।

পশুর নদীর তীরে

কান্দে আমার মা

কান্দে আমার মা নামের একটি অনুষ্ঠান নির্মাণ করেছিলাম। দৈনিক অনুষ্ঠান। প্রামাণ্য। অতি স্বল্পদৈর্ঘ্যের অনুষ্ঠান। এটিএন বাংলা টেলিভিশনে অনুষ্ঠানটি প্রচার হতো। শুরুতে দিনে একবার, পরে দুবার করে। এখনো ...

কান্দে আমার মা

সব লাশ তুলতে পারলে সেদিন বাবা ও ভাইকে খুঁজে পেতাম

যুদ্ধের সময় রাজাকারদের সহযোগিতায় বাড়ি থেকে বাবা মোবারক হোসেন আর যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ভাই চাঁদ আলীকে ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি বাহিনী। সেদিন মায়ের চোখের জল দেখে সহ্য করতে পারিনি। ছুটে গিয়েছিলাম ভাদালিয়া ...

সব লাশ তুলতে পারলে সেদিন বাবা ও ভাইকে খুঁজে পেতাম
বিজ্ঞাপন