হারুন হাবীব: বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভূমিকা কী ছিল?
লে. জেনারেল জগজিত্ সিং অরোরা: আমাদের ভূমিকা ছিল বাংলাদেশে মোতায়েন পাকিস্তানী বাহিনীকে সম্ভাব্য স্বল্প সময়ে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা, যাতে তারা আত্মসমর্পণে বাধ্য হয় এবং বাংলাদেশের সর্বাত্মক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয়। এ জন্য যুদ্ধ পরিচালনার বিশদ পরিকল্পনা, চাইলেই যেন সৈন্যদের কাজে লাগানো যায় সে প্রস্তুতি এবং প্রয়োজনীয় সম্পদগুলো কাজে লাগানো আবশ্যক হয়ে পড়ে। সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়াসহ আরো অনেক সমস্যাও সামাল দিতে হয় আমাদের।
এটা ছিল একটা স্বাধীনতাযুদ্ধ। তাই বাংলাদেশের প্রাদেশিক সরকার, সশস্ত্র বাহিনী ও জনগণকেও যতখানি সম্ভব কাজে লাগানো প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বিদ্যমান সশস্ত্র বাহিনীকে বিস্তৃত ও পুনর্গঠন করতেও বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এছাড়া বাংলাদেশ প্রাদেশিক সরকারের সহযোগিতায় গড়ে তোলা হয় মুক্তিবাহিনী। নাশকতামূলক অভিযান পরিচালনা এবং বাংলাদেশে জনগণের মনোবল চাঙা রাখতে এ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, সজ্জিত করা হয় অস্ত্রশস্ত্রে।
হারুন: ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ভারত-বাংলাদেশ যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকবাহিনী। যুদ্ধে আপনার ব্যক্তিগত ভূমিকা কি ছিল, যৌথবাহিনীর অধিনায়ক হিসেবেই বা আপনার ভূমিকাটা কেমন ছিল?
অরোরা: দুটো প্রশ্নের জবাব একসঙ্গে দিচ্ছি। আমার বিশেষ ও ব্যক্তিগত ভূমিকা শুরু হয় এ অপারেশনের জন্য ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর যৌথ অধিনায়ক নিযুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে। এ জন্যে বাংলাদেশের প্রাদেশিক সরকার, সেনা কর্মকর্তা ও জনগণের আস্থা অর্জন ছিল অত্যাবশ্যক। আর সম্ভাব্য সর্বতোভাবেই এগুলো অর্জন করার সৌভাগ্য হয় আমার।
প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিনকে আমি পেয়েছিলাম। তিনি ছিলেন খুবই নিষ্ঠাবান ও সহযোগিতা পরায়ন। তিনি অন্যদের ভালো বুঝতেনও। আর বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার কর্নেল (পরে জেনারেল) ওসমানী সম্পর্কে এ কথা শুনেছিলাম যে তিনি কিছুটা জটিল ধরনের। তবে তার সঙ্গে আমি ভালোভাবেই ব্যক্তিগত ও কাজের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করতে সফল হই, সম্পর্কটি টিকেও ছিল। ১৯৭২ সালের মার্চে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক অনুষ্ঠানে ওসমানী আমার স্ত্রীকে আমার বিষয়ে একটি কথা বলেছিলেন। আমি সেটা পুনরাবৃত্তি করতে চাই। ওসমানী বলেছিলেন, ‘আর কিছুর জন্য না হলেও আমার মতো একজন বিরক্তিকর বুড়োর সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়ার কারণে জেনারেল একটি বিশেষ পদক পেতে পারেন।’
সক্রিয় লড়াই শুরুর আগেই মুক্তিবাহিনীকে প্রশিক্ষণ দিতে আমার ব্যক্তিগত আগ্রহ ছিল। মুক্তিবাহিনীর যুবকদের প্রবল উদ্দীপনা ও ত্যাগী মনোভাব আমাকে দারুণ মুগ্ধ করে। গোপন ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের কোনো জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা না থাকা সত্বেও তারা এসব কাজে খুব দ্রত নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছিল।
অপারেশন শুরু হতেই বাংলাদেশের মানুষ সাড়া দিল তুমুলভাবে। যেসব জায়গা স্বাধীন হচ্ছিল বা যেখানেই আমাদের সৈন্যরা পৌঁছুতে পারছিল, সেখানেই তারা প্রয়োজনীয় সব রকম সাহায্য-সহায়তা পায়। জনগণের সহযোগিতা ছাড়া এত দ্রুত আমাদের পক্ষে দায়িত্ব শেষ করা সম্ভব ছিল না।
উত্তর দিক থেকে আমাদের যে বাহিনীটি প্রথম ঢাকা পৌঁছায় তারা টাঙ্গাইল থেকে সাজসরঞ্জাম নিয়ে আসার কাজে রিকশা ব্যবহার করে। এই সেনারা ছিল প্যারাস্যুটিস্ট। টাঙ্গাইলের কাছে তাদের নামানো হয়েছিল। তাদের কোনো যানবাহন ছিল না।
পূর্ব দিক থেকে আসা আমাদের বড় বাহিনীটি যে সফলভাবে বিশাল মেঘনা নদী পাড়ি দিতে সক্ষম হয়, তাও স্থানীয় ছোটবড় নানা আকারের নৌযানের সহযোগিতায়। উভচর ট্যাংকগুলোকেও বিস্তৃত জলরাশি অতিক্রম করতে হয়েছিল দেশি নৌকার সহায়তায়। নৌকায় পতাকা টানিয়ে ট্যাংকগুলোকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো। আমাদের এ বাহিনীটি পরে রেলওয়ে ওয়াগনে করে তাদের অস্ত্রসরঞ্জাম নিয়ে ঢাকায় পৌঁছায়। ট্রেনের ইঞ্জিন না পাওয়ায় এলাকাবাসী ওয়াগনগুলো ঠেলে ঠেলে নিয়ে যায়।
অপারেশন শুরু হওয়ার পর আমার দায়িত্ব ছিল ব্যক্তিগতভাবে সরেজমিন পরিদর্শন এবং সাংকেতিক যোগাযাগের মাধ্যমে ঘণ্টায় ঘণ্টায় সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে নিজেকে অবহিত রাখা। আমাকেই নিশ্চিত করতে হতো যে অকারণে কিছুতেই অপারেশন ব্যাহত হচ্ছে না। কোথাও কোনোভাবে গতি মন্থর হলেই প্রতিবন্ধকতা নিরসনে নেওয়া হতো তাত্ক্ষণিক ব্যবস্থা।
সার্বিক সময়ের কথা বিবেচনা করে বলা যায়, আমরা ১৩ দিন লড়াই করে দায়িত্ব সম্পন্ন করেছিলাম, যা ছিল একটি রেকর্ড। এ যুদ্ধ নিয়ে লেখা প্রথম বইয়ের লেখক জেনারেল পালিত যে একে ‘এক বিদ্যুত্ যুদ্ধ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন, তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই।
হারুন: ঢাকায় ঐতিহাসিক আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে লব্ধ আপনার অভিজ্ঞতা বিষয়ে আমাদের কিছু বলুন।
অরোরা: ১৫ ডিসেম্বর, ১৯৭১। সকাল দশটায় আমার ঘুম ভাঙে কলকাতায় কর্মরত ব্রিটিশ ডেপুটি হাইকমিশনারের ফোনে। তিনি জানতে চান, বাংলাদেশে পাক সেনা কমান্ডার নিয়াজির যুদ্ধবিরতির কোনো প্রস্তাব সম্পর্কে আমি জানি কি না। বললাম, না, জানি না। এরপর দিল্লি ফোন করলাম, তাদের কাছে কোনো তথ্য আছে কিনা জানতে। তারাও কিছু শোনেনি। বেলা ১১টার দিকে ডেপুটি হাইকমিশনার আবার ফোন করলেন। বললেন, তার সকালের ফোনকলটি যেন মনে না রাখি। বিকেল তিনটার দিকে দিল্লি আমাকে জানাল যে, নিয়াজির যুদ্ধবিরতির একটি অনুরোধ তারা মার্কিন দূতাবাসের মাধ্যমে পেয়েছে। এদিকে সেনা সদর দপ্তর আমাকে জানাল, তারা নিয়াজিকে বলে দিয়েছে যে আমরা কোনো যুদ্ধবিরতিতে আগ্রহী নই। তবে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করতে চাইলে আমরা মেনে নেব। নিয়াজিকে এও বলা হলো, তিনি যেন ১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টার আগে আমার সদর দপ্তরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করেন।
পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল, নিয়াজি পরাজয় মেনে নিয়েছেন। তাই আমি আত্মসমর্পণ গ্রহণের জন্য জোর প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, এটি যেহেতু একটি মুক্তিযুদ্ধ, তাই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানটি অবশ্যই হতে হবে জনসমক্ষে। স্থান নির্বাচিত হলো রমনা রেসকোর্স। এরপর আত্মসমপর্েণর একটি খসড়া দলিল তৈরি করে অনুমোদনের জন্য দিল্লি পাঠানো হলো।
১৬ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে নিয়াজীর কাছ থেকে সরাসরি সংকেত পেলাম। আত্মসমর্পণের নির্দেশনা তৈরির জন্য একজন স্টাফ অফিসার পাঠাতে তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন। আমি আত্মসমর্পণের নথিপত্র দিয়ে চিফ অব স্টাফকে হেলিকপ্টারে ঢাকায় পাঠিয়ে দিলাম। ততক্ষণে আমাদের সব বাহিনীও ঢাকায় পৌঁছে গেছে। দুপুরের দিকে খবর পেলাম নিয়াজি আমাকে ‘সালাম’ দিয়েছেন। আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে যাদের থাকা উচিত তাদের সবারই দ্রুত সমাবেশ ঘটালাম। এরই মধ্যে হঠাত্ আমরা আবিষ্কার করলাম, কর্নেল ওসমানী সিলেটের উদ্দেশ্যে চলে গেছেন এবং তাকে ফিরিয়ে আনারও কোনো উপায় নেই। তাই তার বদলে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর দ্বিতীয় সিনিয়র মিলিটারি কমান্ডার গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারকে উপস্থিত রাখার সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা।
আমাদের দল যখন ঢাকা বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছাল, তখন বিকেল প্রায় ৪টা। আমাকে স্বাগত জানানোর জন্য নিয়াজি আমার চিফ অব স্টাফকে সঙ্গে নিয়ে বিমানবন্দরে হাজির হয়েছেন। সেখান থেকে আমরা গেলাম রমনা। নিয়াজি আত্মসমর্পণের নথিতে স্বাক্ষর করলেন, আমিও প্রতিস্বাক্ষর করলাম। এরপর নিয়াজি অস্ত্রসমর্পণের স্মারক হিসেবে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁর রিভলভারটি খুলে আমার হাতে তুলে দিলেন। তখন বিকেল ৪টা ৩১ মিনিট। অন্ধকার নামতে শুরু করেছে। আমি নিয়াজিকে বললাম, পরদিনই তার সৈন্যরা আত্মসমর্পণ করবে। নিয়াজিকে আরো বলা হলো, তিনি যেন আমার কর্প্স্ কমান্ডার লে. জেনারেল সাগাত সিংয়ের নির্দেশ অনুসরণ করেন। এরপর নিয়াজিকে পাহারা দিয়ে সেনানিবাসে নিয়ে যাওয়া হলো। আমি আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান দেখতে আসা লোকজনের সঙ্গে মিলিত হতে কিছুদূর পর্যন্ত হাঁটলাম। দর্শকসারিতে কিছু নারীও ছিলেন। দৃশ্যটি আমার ভালো লাগল। এরপর আমি আমাদের পার্টির সঙ্গে কলকাতা চলে গেলাম—কারণ আত্মসমর্পণের একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন দিল্লিতে পেশ করতে হবে।
হারুন: বাংলাদেশ থেকে ভারতীয় সৈন্য প্রত্যাহারের ক্ষেত্রে আপনার কি কোনো আপত্তি ছিল?
অরোরা: না। ১৯৭২ সালের মার্চ নাগাদ বাংলাদেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের ব্যাপারে আমার কোনো আপত্তি ছিল না। সক্রিয় লড়াই শুরু হওয়ার আগেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। তখন আমি দৃঢ়ভাবে বলেছিলাম, অপারেশন শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যেই আমাদের ফিরে আসা উচিত হবে। আমি আরো বলেছিলাম, তিন মাস আমাদের সেনাবাহিনী মুক্তিবাহিনী হিসেবে বিবেচিত হবে। এর চেয়ে বেশি অবস্থান করলেই আমরা দখলদার বাহিনী হিসেবে গণ্য হব। ১৯৭২ সালের ১৪ মার্চ ঢাকায় আমাদের বিদায়ী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। অভিবাদন নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান। এরপর ওই মাসের শেষ নাগাদ সব সৈন্য প্রত্যাহার করা হয়ে যায়।
হারুন: পাকিস্তানী যুদ্ধবন্দিদের দ্রুত হস্তান্তরের ক্ষেত্রে আপনার ভূমিকা কী ছিল? যুদ্ধবন্দিদের বিচার কেন করা হলো না?
অরোরা: বাংলাদেশ থেকে যুদ্ধবন্দিদের ভারতে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে আমার কিছু ভূমিকা ছিল। এরপর থেকে সমস্যাটি আর আমার থাকেনি। তা ছাড়া এই যুদ্ধবন্দিদের বিষয়ে আমার কোনো মতামত নেই। কারণ এরা যখন বাংলাদেশে ছিল, তখন বাংলাদেশ সরকারও বিষয়টি উত্থাপন করেনি।
হারুন: একাত্তর নিয়ে আপনার ব্যক্তিগত স্মৃতিগুলো আজ ইতিহাসের অংশ। এ বিষয়ে দয়া করে আমাদের কিছু বলবেন কি?
অরোরা: যখনই আমি গোটা অভিযানটির কথা স্মরণ করি একটি পরিপূর্ণ আত্মতৃপ্তি আমাকে আচ্ছন্ন করে। সেদিন আমরা শুধু সার্বিক সাফল্যই অর্জন করিনি, আমরা আমাদের একটি প্রতিবেশী দেশকে স্বাধীনতা লাভেও সহায়তা দিয়েছিলাম। এ ছিল এক নিঃস্বার্থ অপারেশন। আমাদের সৈন্যরা শুধু সাহসের সঙ্গে যুদ্ধই করেনি, তারা স্থানীয় জনগণের সঙ্গে বন্ধুসুলভ আচরণ করেছে। পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে যে লাখ লাখ শরণার্থী ভারতে পালাতে বাধ্য হয়েছিল, আমরা তাদের নিজের বাড়িঘরে ফেরত পাঠাতে সক্ষম হয়েছি।
যুদ্ধের আগে ও পরে বাংলাদেশে মোতায়েন থাকাকালে আমাদের সৈন্যরা উষ্ণ ভালোবাসা ও প্রশংসা কুড়ায়। আমি আশা করেছিলাম, এই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক টেকসই হবে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাজনৈতিক নেতারা অন্য কিছু ভাবলেন।...আমি এখনও এই আশা ও প্রার্থনা করি, একদিন এমন এক প্রভাত আসবে যখন আমাদের উপমহাদেশের লোকজন বন্ধুসুলভ প্রতিবেশী হিসেবে বাঁচতে শিখবে এবং গোটা অঞ্চলের সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করবে।
হারুন: বাংলাদেশের মুক্তির সেনানি মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে মন্তব্য করুন। তারা তো যুদ্ধের পুরো নয় মাস জুড়েই দেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত পর্যন্ত দখলদার পাকিস্তানী বাহিনীর বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়াই করে।
অরোরা: মুক্তিবাহিনীর ব্যাপারে আমি একটি বিশেষ কথা বলতে চাই। আমি মনে করি যুদ্ধে সংগঠনটির অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেও গুরুত্বর্পণূ অবদান রেখেছে। তাদের মূল ভূমিকা ছিল জনগণের মনোবল অটুট রাখা এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে পূর্ণাঙ্গ সহায়তা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা। নিয়াজি—মুক্তিবাহিনী সম্পর্কে যিনি সামরিকভাবে বেশি কিছু ভাবেননি—তাঁকেও পরে নিজ মুখে এ কথা স্বীকার করতে হয়েছে: ওরা তাঁকে অন্ধ ও বধির করে দিয়েছিল। তা ছাড়া নিয়াজি আমাদের অভিযান সম্পর্কে জনগণের কাছ থেকে কোনো তথ্যই আদায় করতে পারেনি। কিন্তু আমরা যেখানেই গিয়েছি, যথাসাধ্য সহায়তা পেয়েছি।
অনুবাদ: গাউস রহমান পিয়াস