১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সূচনাকালে ফারুক-ই-আজম উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। সে সময় তিনি খুলনায় ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে অনেক বাধাবিপত্তি পেরিয়ে তিনি চট্টগ্রামে পৌঁছান।
৬ মে তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতের হরিণা ইয়ুথ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন। এই অবস্থায় তিনি একদিন শুনলেন, নৌবাহিনীর জন্য মুক্তিযোদ্ধা রিক্রুট করা হবে। তিনি লাইনে দাঁড়ালেন। টিকে গেলেন। পলাশিতে দুই মাসের প্রশিক্ষণ শেষে ১ আগস্ট অপারেশনের জন্য তাঁকে মনোনীত করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের একমাত্র সমন্বিত যুদ্ধাভিযান ‘অপারেশন জ্যাকপট’। সারা দেশে একই সময়ে সব বন্দরে একযোগে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। চট্টগ্রাম বন্দরে আক্রমণের জন্য ২০ সদস্যের তিনটি দল নির্বাচন করা হয়। একটি দল চট্টগ্রামে এসে পৌঁছাতে পারেনি। বাকি দুটি দলের ৩৭ জন সদস্য অংশ নেন। অধিনায়ক এ ডব্লিউ চৌধুরী। উপ-অধিনায়ক ফারুক-ই-আজম।
নৌ-কমান্ডোদের সঙ্গে ছিল ছয় কেজি ওজনের লিমপেট মাইন। বিশেষ ধরনের চুম্বক দিয়ে জাহাজের গায়ে মাইনটি লাগিয়ে প্লাস্টিকের মুখটি খুলে দিতে হয়। এই অপারেশনে পাকিস্তানি তিনটি বড় জাহাজ—আল আব্বাস, হরমুজ ও কাদের বক্স এবং জেটি পন্টুন, বার্জ ও কোস্টাল শিপ ডুবিয়ে দিয়েছিলেন তাঁরা। এসব অপারেশন মুক্তিযুদ্ধে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ঘটনাটি আন্তর্জাতিক প্রচারমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়।
ফারুক-ই-আজম এরপর বেশ কয়েকবার অপারেশনে অংশ নেন।
সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা: খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা, প্রথম খণ্ড, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা ২০১২
সম্পাদক: মতিউর রহমান, সংগ্রহ ও গ্রন্থনা: রাশেদুর রহমান