যখন উপড়ে নেয়া হলো আমার চোখ
আমি হৃদয়ের আলোয় দেখলাম—শৈশবের
বর্ণপরিচয়ের সাদা পৃষ্ঠায় জ্বলজ্বলে
অক্ষরগুলোয় মিশে থাকা আমার সেই চোখ
বাংলার ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে।
যখন আমাকে পিঠমোড়া করে বাঁধা হলো
চোখে বেঁধে দেয়া হলো কালো কাপড়
ইটখোলার বিরান প্রান্তরে মনে হচ্ছিল
প্রমত্ত ঢেউয়ের বুকে পন্টুন হয়ে ভেসে আছি
কোনো এক ভোরে পথ খুঁজে নিও
হে আমার আগামীর নবীন নাবিক!
আমার পাঁজরের ওপর আড়াআড়ি রাখা হলো
একটি কাঠের পাটাতন, তার ওপর দাঁড়াল
একসারি জল্লাদ-জোয়ান
আমার বুকের খাঁচা থেকে পাখি হয়ে উড়ে গেল
নতুন একটি গানের সুর
কোথাও খুঁজে পাওয়া গেল না আমাকে
সেলুলয়েডের আলো-আঁধারিতে আমি আমার
নিজের মৃত্যুকে দেখেছি আন্দালুশিয়ার নির্জন অরণ্যে
কবি লোরকার রক্তাক্ত অক্ষরগুলোর সাথে লীন হয়ে আছে
এই জমাট রক্তমাখা জলাশয়ে
আমার শাড়ির আঁচলে ঢাকি
বিবস্ত্র স্বদেশের বুক
আততায়ী হন্তারক সময়ের প্রতিধ্বনি তুলে
আসে দুঃস্বপ্নের রাত
বারবার
ফিরে আসে মাস,
আসে রক্তমাখা ডিসেম্বর।
ঢাকা। ১২ ডিসেম্বর ২০১৯
সূত্র: ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ সালের বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত