বিজ্ঞাপন
default-image

এখনও কি দাঁড়াও এসে কোনো শীতভোরে

শিমুল গাছটার আড়ালে চোখে

বিদ্যুতের ঝিলিক তুলে দেখ নদীর ওপারে

শত্রুর বাঙ্কার

যা তোমার একমাত্র অহঙ্কার কাঁধে ফেলে

পুরোনো বান্ধব রাইফেলটি হেঁটে যাও

অজানা গাঁয়ের পথে দাও শিস্ কিংবা ভাব

আনমনে ফেলে আসা কারও শেষ কথাটি;

কখনও কি থমকে দাঁড়াও

সীমান্তের পথের ধারে

দেখ চেয়ে সুদীর্ঘ মানবতা শ্রান্তপায়ে

হেঁটে যায় হেঁটে যায়

কোন এক অগস্ত্য যাত্রায়;

শক্ত চোয়ালে

অজান্তেই ট্রিগারে রাখ হাত

তোমার গন্তব্য জান কেবল তুমি আর

নীরব কমান্ডার;

স্বল্প সময়েই শিখেছ শব্দগুচ্ছ অচিন

এলএমজি, রেকি, অ্যামবুশ, গ্রেনেডের পিন

এসবই বর্ম আজ তোমার আর স্মৃতি

সিগারেটের অংশ নিয়ে খুনসুটি সহযোদ্ধার

লাশের পাশে দাঁড়ানো বিষণ্নতা

কালো ইঁদারার;

আর স্বপ্ন অনেকগুলি

রক্তবিল সাঁতরে আবার

দাঁড়াবে চিরচেনা পুঁইমাচা আঙিনায়

রান্নাঘর থেকে মা হাত মুছতে মুছতে

কান্নাভেজা কণ্ঠে ‘ফিরেছিস বাবা, আয়!’ বন্ধু

ছুটে এসে বলবে ‘শুনেছিস সব কথা!’ ছোট ভাইটি

অপার আগ্রহ নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখবে

তোমার অস্ত্রটি আর সে মেয়েটি

চৌকাঠের আড়াল থেকে চেয়ে রবে

সলজ্জ কৌতুকে;

কিছুটা বিব্রত কাদামাটি মাখা পায়ে

দাঁড়ানো তোমার উপর

শিউলি ফুলের মতো ঝরবে

হাজার বছরের বেহুলা বাংলার আশীর্বাদ;

আকাশের ছুটে চলা নক্ষত্রেরা জানে

প্রতিটা সভ্যতার রংধনু ভোরে

জন্ম নাও তুমি

অজেয় মুক্তিযোদ্ধা।

সূত্র: ১৬ ডিসেম্বর, ২০০৭ সালের বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত