বহুদিন কাকস্নান দেখিনা কোথাও
নোংরা বস্তির পাশে নোংরা মানুষের উদ্ব্যস্ত গোসল শুধু
চোখে পড়ে।
মনে হয় কাকেরা গোসল করা ভুলে গেছে
অথবা স্নানের জলের অভাব দেখে গোসলের অভ্যাস ত্যাগ করে
অন্য কোনো গভীর সিনান শিখে গেছে।
অথচ ঠিকই আছে পানি খানাখন্দে, রাস্তার ভাঙায়
আছে বৃষ্টিরও পানি টুকরা, ভাঙা, ফুটাফাটা পানি
থিকথিকে কাদায়, ড্রেনে সকল বাড়ির মূত্রদ্বারে।
একবার স্বচ্ছ এক ভোরবেলা পুরনো ঢাকার
রাস্তার ফুটপাতের পাশে দেখেছিলাম আশ্চর্য স্বচ্ছ এক পরীর গোসল
যাকে বলে পরীস্নান।
সে কি ফর্সা হাত ফর্সা কান ফর্সা তার হাতের আঙুল-
নুয়ে, বসে, ঝুঁকে, দাঁড়িয়ে, শরীর বাঁকা করে পরী তার গোসল সেরেছে
যেন সে বন্ধ কল চাপিয়ে ওঠা পানির ফোয়ারা
আবর্জনাময় শহরের আরেকটি দিনের শুরুর সঙ্গেই
দুর্গন্ধের স্তূপের ভিতর থেকে ডানা মেলে দ্রুত উঠে গেল পরী
আকাশের দিকে।
এমন নির্ভার সুন্দর গোসল দেখি না কোথাও
আতারি-মাতারিদের নোংরা গোসল শুধু দেখি
কাকস্নান দেখি না অনেক দিন রাস্তায়, ফুটপাতে।
সূত্র: ২৬ মার্চ ২০০৪ প্রথম আলোর "স্বাধীনতা দিবস" বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত