আয়ুরেখা মুছে মুছে এতটা এসেছি। ভয়ে ভয়ে।
পুষ্প বা পাদুকা—কোনো চিহ্নই রাখিনি পিছে ফেলে।
সূর্যাস্ত কি ফেলে গেল কিছু—চুনশাদা বালুচরে?
মন্থর স্রোতের টানে থেমেছে ইঞ্জিন—যেন তারই
পূর্বাভাস পেয়ে। একে একে ভেসে যায় নৌকাগুলি
শেয়ালের ডাক দিয়ে ঘেরা থমথম কাশবনে।
বাতাসে গুটিয়ে হাতা, গগনশিরীষ এল কবে
ছোট্ট জানালার পাশে! বিস্মৃতিও এত ঘ্রাণময়!
সময় মোমের মূর্তি—জ্বলে ওঠে, তাই গলে যায়।
বুকের নিটোল হেডলাইটে এই পৃথিবী এখন
শুধু নগ্নিকাই বুঝি দেখতে পায়। দেখাতে কি পারে?
নির্বাক বাদুড় যত দূর ওড়ে—ছেয়ে ফ্যালে হিম
তমসায়। তমস্বিনী, কার হাত ধরে পার হব
এ রাত্রির গুহা—অমাময়ী মা আমার! ভয়ে ভয়ে
এখানে এসেছি। আয়ুরেখা মুছে মুছে। তাই আর
পুষ্প, পাদুকার কোনো চিহ্নই রাখিনি পিছে ফেলে।
পাথুরে চোয়াল ঠেলে, শুনতে পাই, এতদিন পর
গম্ভীর দেয়াল ডাকছে আমাকেই নাম ধরে—‘আয়’।
সূত্র: ২৬ মার্চ ২০১৫ প্রথম আলোর "স্বাধীনতা দিবস" বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত