বিজ্ঞাপন
default-image

‘মাগো কতদিন খাইনি তোমার হাতের

কুমড়ো ফুলের বড়া

কচি মিঠা কদু, ডিমভরা কই মাছ দিয়ে।’

মাচানের কদু মাচানে শুকায়

মায়ের কলিজা সাথে।

শিকেয় তোলা নাড়ুগুলি যেন বাছার গন্ধ আনে,

আল্লারে ডাকি। মায়ের দিলের কাঁদন

তুমি কি শোন না হায়?

আমার সাজানো বাগান

হয়েছে শ্মশান।

চোখে মাকড়ের ঝুল

বাছাকে আমার আঁখিতে, নদীর ঘাটের পথে

দেখব না আর সাজিনার ছায়ে ছায়ে।

আহা যেন সে বিস্মৃত স্বর

হাসি মাখা ‘মাগো এসেছি আমি

দুদিন ছুটির ফাঁকে’

এ জীবনে আর একটি ঘণ্টার

ছুটিও সে তার মায়ের তরে

নিতে পারবে না হায় আর।

দোয়া মাগি আল্লাহ

আমার বাছার সাধ যেমনি সে চেয়েছিল

মাতৃভূমির সাজ

ওপার থেকে দেখুক সে অন্তত আজ।

তারিখ জানা নেই

সম্ভবত: ১৯৬৯ সাল

[কবি সেলিনা পারভীন ১৪ ডিসেম্বর’৭১-এ শহীদ হন। ’৬৯-এ ‘ড. রাজিয়া খান’-এর ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ ‘শহীদ কবি সেলিনা পারভীন’-এর দুটি কবিতার একটি, যা তিনি নিজ হাতে লিখে দিয়েছিলেন। ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী সেলিনা পারভীন স্মারক গ্রন্থ’ প্রকাশিত হওয়ার পর এর সন্ধান পাওয়া যায়। কবিতাটি তার ছেলে সুমন জাহিদের সৌজন্যে পাওয়া গেছে।]

সূত্র: ২৬ মার্চ ২০০৭ প্রথম আলোর "স্বাধীনতা দিবস" বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত