বিজ্ঞাপন
default-image

মো. ইদ্রিস আলী ১৯৭১ সালের সেপ্টেম্বরের শেষে প্রথম সম্মুখযুদ্ধ করেন বালিউড়া-শনখাই এলাকায়। এই এলাকার সবচেয়ে বড় যুদ্ধ ছিল ছাতক যুদ্ধ। ১৯৭১ সালের ১৩ থেকে ১৬ অক্টোবর ছাতক সিমেন্ট কারখানাকে ঘিরে এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। এতেও ইদ্রিস আলী অংশ নেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যদের ঠিকমতো অবস্থান নিতে সহায়তা করা এবং রাজাকারদের হটানোই ছিল তাঁর অধীন মুক্তিযোদ্ধাদের দায়িত্ব।

মো. ইদ্রিস আলী ১৯৭১ সালে এইচএসসি পাস করে সিলেটের মদনমোহন কলেজে নৈশ শাখায় পড়তেন। একই সঙ্গে দোয়ারাবাজারের বড়খাল জুনিয়র হাইস্কুলে শিক্ষকতা করতেন। এপ্রিলে পাকিস্তানি বাহিনী ছাতক ও দোয়ারাবাজারে আসে। তখন তাঁরা কয়েকজন মিলে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তারপর ভারতের মেঘালয়ের ইকো ওয়ান ট্রেনিং সেন্টারে প্রথম ব্যাচে ২৮ দিন প্রশিক্ষণ নেন তাঁরা।

প্রথম দিকে ‘হিট অ্যান্ড রান’ পদ্ধতিতে ইদ্রিস আলী ও তাঁর সহযোদ্ধারা রাতে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প লক্ষ্য করে কিছুক্ষণ গুলি চালিয়ে আবার চলে যেতেন ওপারে। এভাবে তাঁরা কয়েকটি ছোট অপারেশন চালান।

জুলাইয়ে মো. ইদ্রিস আলীর নেতৃত্বে এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা পাঠানো হয় দোয়ারাবাজারের বাংলাবাজারে। তখন বাজারটির নাম ছিল পাকিস্তান বাজার। পরে তিনি তাঁর সহযোদ্ধাদের নিয়ে টেবলাই, চানপুর, জয়নগর এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের অবস্থানের কাছাকাছি বাংকার ও পরিখা তৈরি করে অবস্থান নেন। তাঁরা কয়েকবার ছাতক-টেংরাটিলা গ্যাসের পাইপলাইন উড়িয়ে দেন। পাকিস্তানি সেনারা এক জায়গায় মেরামত করলে তাঁরা আবার আরেক জায়গায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিতেন।

সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা: খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা, প্রথম খণ্ড, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা ২০১২

সম্পাদক: মতিউর রহমান, সংগ্রহ ও গ্রন্থনা: রাশেদুর রহমান