বিজ্ঞাপন
default-image

মতিউর রহমান ১৯৭১ সালে দশম শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন। মা-বাবাকে না বলেই মে মাসের কোনো একদিন তিনি ভারতে চলে যান। ভারতীয় নৌবাহিনীতে তিনি তিন মাস প্রশিক্ষণ নেন। যুদ্ধে তাঁর দায়িত্ব ছিল মাইন দিয়ে জাহাজ ডুবিয়ে দেওয়া।

যুদ্ধ শেষে মতিউর আবার স্কুলে ভর্তি হন। এসএসসি পাস করে উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণীতে ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত পাস করা হয়নি। পরে তিনি ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেন। এর আয় দিয়েই তাঁর দিন চলতে থাকে। মতিউর রহমান পরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করে জানতে পারেন যে তিনি সত্যিই ‘বীর প্রতীক’ খেতাব পেয়েছেন।

মতিউর রহমান জানান, তিনি ১০ নম্বর সেক্টরের অধীনে নৌ-কমান্ডো ছিলেন। তাঁরা ভারত থেকে এসে পাকিস্তানি বাহিনীর জাহাজে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আবার ভারতে চলে যেতেন। তিনি সাফল্যের সঙ্গে তিনটি অপারেশনে অংশ নেন। তিনটি অপারেশনই ছিল নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে। প্রথমটি কাঁচপুর সেতুসংলগ্ন স্থানে। দ্বিতীয়টি নারায়ণগঞ্জ টার্মিনাল ঘাট এবং তৃতীয়টি গলাগাছিয়ায়। তিনি প্রথম অপারেশনে অংশ নেন অক্টোবরে। রাত দেড়টার দিকে শুরু করেন অপারেশন। তাঁদের দলে ছিলেন মোট পাঁচজন। সবার বুকে মাইন বাঁধা। ওই দিন রাতে তাঁরা কাঁচপুর সেতুর কাছে জাহাজে মাইন লাগিয়ে চলে আসেন। পরে সময়মতো মাইনটি বিস্ফোরিত হয়।

মতিউর রহমান পোশাক কারখানার চাকরি থেকে অবসর নেন।

সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা: খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা, প্রথম খণ্ড, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা ২০১২

সম্পাদক: মতিউর রহমান, সংগ্রহ ও গ্রন্থনা: রাশেদুর রহমান