বিজ্ঞাপন
default-image

নজরুল হক ১৯৭১ সালে দিনাজপুরে ইপিআরে কর্মরত ছিলেন। তখন তাঁর পদবি ছিল ক্যাপ্টেন।

২৬ মার্চের পর দিনাজপুরের দশমাইল এলাকায় তিনি পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেন। তাঁর অধীনে ছিলেন ৬০ জন ইপিআর সেনাসদস্য। সে সময় তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদ ছিল না। ফলে তাঁদের পিছু হটতে হয়। ওই যুদ্ধ শেষে দিনাজপুরের কান্তনগরের বনজঙ্গলে দুই দিন থাকার পর রওনা হন ভারতের উদ্দেশে। এপ্রিলের মাঝামাঝি ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গি সীমান্ত দিয়ে তিনি আবার দেশে প্রবেশ করেন।

১৮ তারিখ সন্ধ্যা থেকে নজরুল হকের নেতৃত্বে ইপিআরের ৬০ জন সেনাসহ ১০০ জনের মতো একটি প্রতিরোধযোদ্ধার দল বিরলে যুদ্ধ করে। সেদিন তারা গুলি শুরু করামাত্র পাকিস্তানি সেনারাও জবাব দিতে থাকে। একটানা চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা চলে গুলি-পাল্টা গুলি। বিরল মুক্ত করার জন্য নজরুলের নেতৃত্বে তাঁর দল মরিয়া হয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে চলে। রাত সাড়ে ১২টার পর বিরলের পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্প থেকে আর কোনো আওয়াজ আসছিল না। ভোরের আলো ফুটতেই ক্লান্ত শরীর নিয়ে তাঁরা দেখতে পান, বিরলের পাকিস্তানি আর্মির ক্যাম্প ফাঁকা। তাঁরা বুঝতে পারেন, পাকিস্তানি আর্মিরা পিছু হটেছে।

১৯৮২ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে থাকাকালে সেনাবাহিনীর চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন।

সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা: খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা, প্রথম খণ্ড, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা ২০১২

সম্পাদক: মতিউর রহমান, সংগ্রহ ও গ্রন্থনা: রাশেদুর রহমান