বিজ্ঞাপন
default-image

দেলোয়ার হোসেন চাকরি করতেন ইপিআরে। ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন যশোর ইপিআর সেক্টরের অধীনে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এতে যোগ দেন। যশোর জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধযুদ্ধে অংশ নেন তিনি। যশোরের পতন হলে তাঁর সঙ্গী-সাথিদের বেশির ভাগই আশ্রয় নেন ভারতে। তিনি তাঁর দলনেতার অনুমতি নিয়ে নিজ এলাকায় এসে দেখেন, তাঁর এলাকা তখনো মুক্ত। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর তত্পরতা তখনো শুরু হয়নি। তা দেখে স্থানীয় ছাত্র-যুবকদের সংগঠিত করে তাঁদের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন। কিছুদিনের মধ্যেই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী তাঁর এলাকায় তত্পরতা শুরু করে। তখন দলের সবাইকে নিয়ে তিনি ভারতে চলে যান।

দেলোয়ার হোসেন পরে যুদ্ধ করেন ২ নম্বর সেক্টরের রাজনগর সাব-সেক্টরের অধীনে। পরিবারের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ডিসেম্বরের প্রথম দিকে ফেনীর পাঠাননগরের এক যুদ্ধে তিনি শহীদ হন। সহযোদ্ধারা তাঁকে সমাহিত করেন পাঠাননগরেই। রাজনগর সাব-সেক্টর এলাকায় অসংখ্য যুদ্ধ সংঘটিত হয়।

মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত পর্যায়ে ফেনী জেলার বিলোনিয়ার কয়েকটি এলাকায় অবস্থানরত পাকিস্তানি সেনাদের অবরুদ্ধ করার জন্য মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনী সীমান্ত অতিক্রম করে বন্দুয়া-দৌলতপুর-পাঠাননগরে প্রবেশ করে। কিন্তু এর আগেই পাকিস্তানি সেনারা দ্রুত বিলোনিয়ার সব অবস্থান ছেড়ে ফেনীতে সমবেত হয়। পাঠাননগরে ছিল তাদের শক্ত এক অবস্থান। ডিসেম্বরের প্রথম দিকে মুক্তিযোদ্ধারা ফেনীর পাঠাননগরে পাকিস্তানি সেনাদের মুখোমুখি অবস্থান নেন। একটি দলে ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। মুক্তিযোদ্ধারা পাঠাননগরে অবস্থান নেওয়ার পর দুই পক্ষে গোলাগুলি চলতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত এখানে প্রতিদিনই খণ্ড খণ্ড যুদ্ধ হয়। সে সময় কোনো এক যুদ্ধে দেলোয়ার হোসেন শহীদ হন। কীভাবে শহীদ হন, এর কোনো বর্ণনা কোথাও পাওয়া যায়নি।

সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা: খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা, প্রথম খণ্ড, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা ২০১২

সম্পাদক: মতিউর রহমান, সংগ্রহ ও গ্রন্থনা: রাশেদুর রহমান