বিজ্ঞাপন
default-image

১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দিই আমি। আমার চাকরির বেশির ভাগ সময় কেটেছে পশ্চিম পাকিস্তানে। তখন অফিসার হিসেবে বছরে ৩০ দিনের ছুটি পেতাম। পশ্চিম পাকিস্তানের যে এলাকা আমার কর্মস্থল ছিল সেখান থেকে বাংলাদেশ তথা আমার গ্রামের বাড়ি হবিগঞ্জ আসতে এবং ছুটি শেষে পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যেতে ব্যয় হতো ঢের সময়। ফলে প্রতিবছর ছুটিতে না এসে তিন বছর পর একবারে ৯০ দিনের ছুটিতে দেশে আসতাম আমি। তো, এভাবেই ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে ৯০ দিনের ছুটিতে হবিগঞ্জ এলাম। আমি তখন মেজর।

ছুটিতে দেশে এসে আমি তো অবাক! দেশের পরিস্থিতি ভালো মনে হলো না। তত দিনে জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের নির্বাচন শেষ হয়েছে। উভয় নির্বাচনেই আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের প্রায় সব আসনে জয়ী হয়েছে। তাই আমাদের মনে হচ্ছিল, সহসাই ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে আওয়ামী লীগের কাছে। কিন্তু পাকিস্তান সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরে বিলম্ব করতে থাকল। আর বাড়তে থাকল দেশের অস্থিরতাও। গোটা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে স্বীয় সামরিক জ্ঞানে আমার মনে হচ্ছিল, এখনই রাজনৈতিক সমাধান না হলে সংঘাত অনিবার্য। এর মধ্যে শুরু হয়েছে উত্তাল মার্চ। এদিকে আমার ছুটিও আর বেশিদিন নেই। বুঝতে পারছি না কী করব—মনের মধ্যে নানা শঙ্কা। তো, ২৫ মার্চের কালরাতে ঢাকায় শুরু হওয়া পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের খবর পেলাম হবিগঞ্জে বসে, ২৬ মার্চ হবিগঞ্জে বসেই জানতে পারলাম, রাজনৈতিক সমঝোতার পথ ছেড়ে নারকীয় যুদ্ধের পথ বেছে নিয়েছে সামরিক সরকার।

২৭ মার্চ সকালে স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের করণীয় নিয়ে আলোচনা করছিলাম আমি। এ সময় কিছু ছাত্র এসে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমার সাহায্য চাইল। আমি তাদের বললাম, যুদ্ধ সামরিক বাহিনীর কাজ কিন্তু যুদ্ধের সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজনীতিবিদদের। সেই মুহূর্তে আওয়ামী লীগ বা নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরাই ছিলেন বৈধ রাজনৈতিক নেতৃত্ব। তাই ওই ছাত্রদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি অবসরপ্রাপ্ত লে. কর্নেল আবদুর রবের (পরবর্তীকালে মেজর জেনারেল ও বীর উত্তম) সঙ্গে কথা বলতে বললাম আমি। সঙ্গে এটাও জানালাম, রব সাহেব আমাকে নির্দেশ দিলে হানাদারদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সব ধরনের সাহায্য করতে প্রস্তুত আমি।

সেদিন বেলা দুটোর দিকে কর্নেল রব তাঁর বাসায় ডেকে পাঠালেন আমাকে। আমি সেখানে গিয়ে ছুটিতে থাকা কয়েকজন সেনাসদস্য, আনসার, মুজাহিদ প্রভৃতি বাহিনীর সদস্যদের দেখতে পেলাম। কর্নেল রব আমাকে সবার সঙ্গে পরিচয় করানোর পর বললেন, সিলেট দখল করার পরিকল্পনা করেছেন তিনি এবং আমাকে এই অভিযানের নেতৃত্ব দিতে হবে। তাঁর প্রস্তাবে সম্মত হলাম সানন্দেই। এরপর ওই দিন বিকেল পাঁচটায় আমার বাড়ির সামনে এসে পৌঁছাল একটি জিপ এবং পাঁচটি বাস ও ট্রাক, তাতে মুক্তিযোদ্ধারা। ‘স্বাধীনতার ডাক এসেছে, আমাকে এখনই যেতে হবে’—স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে বিদায় নিলাম আমি।

আমি, কর্নেল রব ও মানিক চৌধুরী (সংসদ সদস্য ও আমাদের এলাকায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রধান সংগঠক) একই গাড়িতে বসলাম। গন্তব্য ছিল শায়েস্তাগঞ্জের রশিদপুর চা-বাগান। পথে অনেক প্রতিবন্ধকতা। রশিদপুর পৌঁছাতে বেজে গেল রাত এগারোটা। সে রাতে চা-বাগানেই থাকলাম আমরা। ঠিক করলাম, পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার আগে পাকিস্তান বাহিনীর অবস্থান সম্পর্কে খবর সংগ্রহ করতে হবে; উপরন্তু আমাদের কাছে যুদ্ধের জন্য কী পরিমাণ জনবল ও অস্ত্র আছে—সেসব জানাও জরুরি।

মুক্তিবাহিনী এবং তাদের অস্ত্রের হিসাব নিলাম ২৮ মার্চ সকালে। দেখা গেল, ছুটিতে আসা সৈনিক, অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক, পুলিশ, আনসার, মুজাহিদ—সব মিলিয়ে অস্ত্রধারীর সংখ্যা মাত্র ১৫০ জনের মতো। তাদের সঙ্গে আছে পয়েন্ট ৩০৩ রাইফেল আর দশ রাউন্ড গুলি। কোনো স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের বালাই নেই। এত অল্প শক্তি নিয়ে সিলেট মুক্ত করা যে প্রায় অসম্ভব তা বুঝেও লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হলাম না আমরা। সিদ্ধান্ত নিলাম, জনগণের শক্তিকে সম্বল করে আমাদের লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। স্থানীয় জনগণকে তাদের যা কিছু আছে তা নিয়েই আমাদের সঙ্গে যোগ দিতে অনুরোধ করলাম। আর মানিক চৌধুরীকে অনুরোধ করলাম যেকোনোভাবে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জোগাড় করতে। রশিদপুরকে তখন আমরা বেসক্যাম্প বানিয়েছি, চেষ্টা করছি শক্তিবৃদ্ধির।

২৮ ও ২৯ মার্চ কেটে গেল নিজেদের বাহিনী সংগঠিত, শক্র সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ আর যুদ্ধের পরিকল্পনা করতে। শত্রু সম্পর্কে সঠিক তথ্য না থাকায় তাদের আগমনের সম্ভাব্য পথগুলোতে পাহারা বসালাম আমরা। ওদিকে মানিক চৌধুরীও অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংগ্রহে আংশিক সফল হলেন।

৩০ মার্চ খবর পেলাম শত্রু বাহিনী শ্রীমঙ্গল এসে নিরপরাধ জনগণের ওপর অত্যাচার করছে। ওদের প্রতিহত করতে ৩০ মার্চ দিবাগত রাতে শ্রীমঙ্গলের প্রায় দুই মাইল দূরে অবস্থান নিলাম দলবলসহ। কিন্তু ৩১ মার্চ সকাল আটটায় শ্রীমঙ্গল শহরে প্রবেশ করতেই দেখা গেল শ্রীমঙ্গল ছেড়ে মৌলভীবাজারের দিকে চলে গেছে শক্র বাহিনী। সময় নষ্ট না করে মৌলভীবাজারের উদ্দেশে রওনা হলাম। শ্রীমঙ্গল থেকে সাত-আট মাইল দূরে নয়নপুরের কাছে নাগালের মধ্যে পেলাম শত্রুসৈন্যদের। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রবল আক্রমণে পরাস্ত হলো তারা। এরপর আমাদের লক্ষ্য সিলেট আক্রমণ। ফলে রশিদপুর থেকে বেসক্যাম্পটি সরিয়ে আনা হলো মৌলভীবাজারে।

default-image

তো, এর মধ্যে সীমান্ত থেকে আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ইপিআর সদস্যরাও। সব মিলিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা তখর চার শতাধিক। এ সময় সংবাদ পেলাম, পাকিস্তানি সৈন্যরা সিলেট থেকে প্রায় ২৫-৩০ কিলোমিটার দূরে সাদীপুর আর শেরপুরে কুশিয়ারা নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। ৫ এপ্রিল ভোররাতে হলো শেরপুর আক্রমণের পরিকল্পনা।

৪ এপ্রিল রাত আটটার দিকে আমরা শেরপুরের উভয় দিকে নদীর দক্ষিণ পাড়ে দুই প্লাটুন করে সৈন্য প্রস্তুত রাখলাম। বাকি মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে শত্রুর মুখোমুখি অবস্থান নিলাম আমি। পরিকল্পনা এমন: ভোরের আলো ফোটার পরপর আমার নির্দেশে সামনের মুক্তিযোদ্ধারা শত্রুর দিকে গুলি ছুড়ে তাদের ব্যস্ত রাখবেন। এ সময় দুদিকের মুক্তিযোদ্ধারা নদী পার হয়ে শুরু করবেন সাঁড়াশি আক্রমণ। পরিস্থিতি অনুকূলে এলে সামনের মুক্তিযোদ্ধারাও নদী পার হয়ে আক্রমণ করবেন শত্রুকে। রাত ১০টার দিকে সবাইকে বুঝিয়ে দেওয়া হলো পরিকল্পনা। তবে বিধি বাম। ভোর পাঁচটায় আমাদের উপস্থিতি টের পয়ে গোলাগুলি শুরু করে দিল শত্রুরা। আমরাও দিতে থাকলাম পাল্টা জবাব। একপর্যায়ে আমাদের সঙ্গে এলাকাবাসীও যোগ দিল। চারদিক থেকে আসছে ‘জয় বাংলা’ আর ‘ইয়া আলি’ ধ্বনি, এগিয়ে যেতে থাকলাম আমরা। দুপুর ১২টার দিকে ১২ জন সহযোদ্ধার লাশ ফেলে সাদীপুরের দিকে পালিয়ে গেল শত্রুরা। এই যুদ্ধে শহীদ হলেন আমাদের তিন মুক্তিযোদ্ধা।

ঘটনা এখানে শেষ হলো না, শত্রু বাহিনী সাদীপুর থেকে শেরপুরে আমাদের অবস্থানের ওপর গোলাবর্ষণ শুরু করল। এর মধ্যে সংবাদ পেলাম সাদীপুরে তিন-চারটি ট্রাক এসেছে ওদের। ভাবলাম, হয় শত্রু এখানে শক্তি বৃদ্ধি করছে, নয়তো পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করছে। আমি খারাপটা মাথায় রেখে মৌলভীবাজার বেসক্যাম্প থেকে দ্রুত আরও মুক্তিযোদ্ধা পাঠানোর নির্দেশ দিলাম। সাদীপুরকে চার দিক থেকে ঘিরে গোলাগুলি চালাতে থাকলাম আমরা। সন্ধ্যার পর আক্রমণের ফাঁস ধীরে ধীরে আঁটসাঁট করতে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ পর শব্দ পেলাম শত্রু বাহিনীর গাড়ির। বুঝলাম পালাচ্ছে ওরা। আমাদের দখলে এল সাদীপুর।

তবে যানবাহনের অভাবে শত্রুদের আমরা তাড়া করতে পারলাম না। এ ছাড়া রাতের অন্ধকারে আমাদের কম অভিজ্ঞ মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে এ ধরনের অভিযান চালানো সমীচীনও মনে হলো না আমার কাছে।

পরদিন মৌলভীবাজার গিয়ে পেলাম মেজর (পরে মেজর জেনারেল ও বীর উত্তম) সফিউল্লাহকে। তিনি সেকেন্ড ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টকে নিয়ে বিদ্রোহ করেছিলেন। সিলেট আক্রমণের জন্য তাঁকে কিছু প্রশিক্ষিত সৈন্য দেওয়ার অনুরোধ করলাম। আমার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ক্যাপ্টেন (পরে মেজর জেনারেল ও বীর উত্তম) আজিজুর রহমানকে এক কোম্পানি সৈন্যসহ আমার কাছে পাঠিয়ে দিলেন সফিউল্লাহ।

তারপর ক্যাপ্টেন আজিজকে কুলাউড়া ও গোলাপগঞ্জ হয়ে সিলেটের সুরমা নদীর দক্ষিণ পাড়ে প্রতিরক্ষা অবস্থান নিতে বললাম আমি। আজিজ সিলেট থেকে তিন মাইল দক্ষিণে শত্রুর গুলির মুখোমুখি হলেন। নিজের বাহিনীর সর্বশক্তি প্রয়োগ করে শত্রুকে উৎখাতের মাধ্যমে সুরমা নদীর দক্ষিণে অবস্থান নিলেন তাঁরা। আমরা সংবাদ পেলাম যে শত্রু আমাদের ১০-১২ কিলোমিটার উত্তরে বিশ্বনাথ এলাকায় শক্ত ঘাঁটি বানিয়েছে। সেখানে তারা মাইনও বসিয়েছে। এবার আমাদের লক্ষ্য বিশ্বনাথ আক্রমণ।

রাতের অন্ধকারে বিশ্বনাথে ঝাঁপিয়ে পড়লাম শত্রুর ওপর। শক্তি ও অভিজ্ঞতা বেশি থাকা সত্ত্বেও আমাদের মনোবলের কাছে তারা বিধ্বস্ত হয়ে সিলেটে পালিয়ে গেল।

কেবল সিলেট শহর ছাড়া সম্পূর্ণ সিলেট জেলা আমাদের দখলে এল ৭ এপ্রিলের মধ্যে। শত্রুরা সিলেট বিমানবন্দর ও লাক্কাতুরা চা-বাগানের মধ্যে তখন অবরুদ্ধ। এখনই তাদের পুরোপুরি ধ্বংস করার উপযুক্ত সময়। তবে এর জন্য আরও সৈন্য দরকার আমার। কর্নেল রব ও মানিক চৌধুরীর কাছে সৈন্য ও অস্ত্রশস্ত্রের জন্য খবর পাঠালাম।

৮ এপ্রিল সকালে সিলেট মুক্ত করার পরিকল্পনা করছিলাম আমি ও আজিজ। এমন সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর লে. কর্নেল লিমাইয়া এলেন আমাদের কাছে। আমাদের আসামের শিলচরে যাওয়ার আহ্বান জানালেন তিনি। শিলচরে গিয়ে ভারতীয় সাহায্যের ব্যাপারে তাদের সম্মতি লাভ করলাম আমি। আলাপ-আলোচনায় বেজে গেল রাত বারোটা। রাতেই সিলেটের উদ্দেশে রওনা হলাম। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় বুকে ও পায়ে আঘাত পেলাম। কিন্তু আহত অবস্থায়ই সিলেটে এসে সৈন্য পরিচালনা করলাম আমি।

৯ এপ্রিল আজিজকে সুরমা নদীর দক্ষিণ পাড়ে প্রতিরক্ষা অবস্থান নেওয়ার দায়িত্ব দিলাম। আর রাত প্রায় এগারোটার দিকে চার কোম্পানি সৈন্য নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকে লাক্কাতুরা চা-বাগান ও বিমানবন্দরের ওপর আক্রমণ শুরু করলাম নিজে। ১০ এপ্রিল সারা দিন চলল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি। আমরা যেমন, শত্রু বাহিনীও মরিয়া। আমাদের আক্রমণ প্রতিহতের শেষ চেষ্টায় রত। শেষে শত্রু বিমান আজিজের অবস্থানে উপর্যুপরি বোমাবর্ষণ শুরু করল। ফলে অবস্থান ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে পড়ল আজিজের পক্ষে। তাকে অবস্থান ত্যাগ করে মৌলভীবাজারের দিকে চলে যেতে বললাম। লাক্কাতুরার প্রতিরক্ষা অবস্থান ছেড়ে গোলাপগঞ্জে নতুন প্রতিরক্ষা অবস্থান নিলাম আমরাও। পাকিস্তানিরা ইতিমধ্যে সিলেটে নতুন সৈন্য, অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে এসেছে। আমাদের পক্ষে তাদের প্রতিহত করা আর সম্ভব হলো না। ধীরে ধীরে যুদ্ধ করতে করতে এপ্রিল মাসের শেষের দিকে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের করিমগঞ্জে পৌঁছালাম আমরা। এভাবেই শেষ হলো সিলেট এলাকায় আমাদের প্রতিরোধযুদ্ধ।

প্রতিরোধযুদ্ধ শেষ হলে নিজেদের নতুন করে সংগঠিত করলাম আবার। পুরো মুক্তিবাহিনীকে ভাগ করা হলো এগারো সেক্টরে। আমাকে দেওয়া হলো ৪ নম্বর সেক্টরের দায়িত্ব। মে মাস থেকেই আবার ঝাঁপিয়ে পড়লাম শত্রু নিধনে। অক্টোবর মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত বিজয়ের ঘ্রাণ পেতে শুরু করি আমি। আমি আমার সহযোদ্ধাদের নির্দেশ দিলাম, ‘এবার যুদ্ধ হবে বাংলাদেশের মাটিতে। আর পেছানো যাবে না। এখন থেকে পাকিস্তানিদের এক এক করে শেষ করে দিতে হবে; জন্মভূমির মাটি থেকে পাকিস্তানিদের নিঃশেষ করে ছিনিয়ে আনতে হবে স্বাধীনতা।’

অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হলো আমার মাতৃভূমি, এল প্রত্যাশিত বিজয়।

সি আর দত্ত বীর উত্তম: মুক্তিযুদ্ধের চার নম্বর সেক্টর কমান্ডার; অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল।

সূত্র: ২৬ মার্চ ২০১৭ প্রথম আলোর "স্বাধীনতা দিবস" বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত