বিজ্ঞাপন
default-image

নিক্সন: আমি কিটিংকে বলেছি, একটি অভ্যন্তরীণ বিবাদে আমরা যেন কিছুতেই জড়িয়ে না পড়ি।

কিসিঞ্জার: কিন্তু কিটিং এ ব্যাপারে একদম খেপে উঠেছে যেন।

নিক্সন: এ ব্যাপারে আমাদের কী করা উচিত বলে ওর ধারণা?

কিসিঞ্জার: কী আবার, ও চায় আমরা যেন সব রকম সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য বন্ধ করে দিই এবং পাকিস্তানকে দুই টুকরা করতে ভারতকে সাহায্য করি।

নিক্সন: এ রকম গর্দভের মতো কাজের কথা নিয়ে ও যেন আমার কাছে না আসে।

কিসিঞ্জার: মি. প্রেসিডেন্ট, আমাদের ইয়াহিয়াকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে (কথোপকথন অস্পষ্ট)...

নিক্সন: চীনাদের ব্যাপারটা যদি বাদও দিই, তাহলেও ভারতের সাহায্য হয়, এমন কিছু আমি করতে প্রস্তুত নই। ভারতীয়রা যত দুষ্কর্মের জন্য দায়ী। শুধু কিটিং কেন, যে রাষ্ট্রদূতই ভারতে যায়, তাদের সবার মাথাই গুলিয়ে যায়।

কিসিঞ্জার: যত সব হারামির বাচ্চা! ওরা আমাদের জন্য কখনো কিচ্ছু করে দেখায়নি। তাহলে এখন আমরা কেন পূর্ব পাকিস্তানের গন্ডগোলে জড়িয়ে পড়ব? তা ছাড়া পূর্ব পাকিস্তান যদি স্বাধীন হয়ে পড়ে, তাহলে দেশটা একটা আস্ত ভাগাড়ে পরিণত হবে। ১০০ মিলিয়ন মানুষ, ওখানে জীবনের মান হবে এশিয়ায় সবচেয়ে নিচে।

নিক্সন: হ্যাঁ, ঠিক।

কিসিঞ্জার: কোনো সম্পদ নেই। কমিউনিস্ট অনুপ্রবেশের জন্য একদম প্রস্তুত। তারপর পশ্চিম বাংলা দিয়ে ভারতের ওপর (কমিউনিস্ট) প্রভাব বিস্তার করবে। অন্য কথায়, নিজেরাই নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনছে ভারত। অবশ্য ভারত হয়তো ভেবে থাকবে যে কলকাতায় বসে তারা সে দেশের ওপর নিজের মাতব্বরি ফলাবে। হতে পারে, মনে মনে সে রকম অভিসন্ধিই তাদের আছে।

নিক্সন: আসলে ওদের মনে যে অভিসন্ধি আছে, তা হলো পাকিস্তানকে ধ্বংস করা।

৪ জুন ১৯৭১

১৯৭১: বন্ধুর মুখ শত্রুর ছায়া, হাসান ফেরদৌস

সূত্র: ২৬ মার্চ ২০১৪ প্রথম আলোর "স্বাধীনতা দিবস" বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত