বিজ্ঞাপন
default-image

আত্নীয়স্বজন

পাড়াপ্রতিবেশী

বড়জোর জেলা

এই সংকীর্ণ পরিচয়ে

অভ্যস্ত তরুণেরা

সেদিন অসীম সাহসে হুংকার দিল,

‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধর

বাংলাদেশ স্বাধীন কর।’

দেশের জন্য কতদিন,কতদিন পরে

বাঙালিরা অস্ত্র ধারণ করল

আর বাংলাদেশ তারা স্বাধীনও করল।

মুক্তিযোদ্ধার মা

আমবাগানের পূর্বপ্রান্তে

শেষ গাছটা ধরে

যত দূর দৃষ্টি যায়

ছেলের প্রস্থানপথে চেয়েছিল।

মা কি জানত তার বুক খালি করে

তার ছেলে মহাপ্রস্থানের পথে চলে যাবে

আর সে যে আর ফিরবে না!

মায়ের অশ্রুধারা

ছেলের গালে লেগেছিল

সে তা মুছে ফেলেনি।

ছেলের কপালে মায়ের ভিজে চুমু লেগেছিল

সে তা তা মুছে ফেলেনি।

যেদিন দেশ স্বাধীন হলো

সেদিন মায়ের বুক ভরে গেল

এক অনন্য আনন্দে

এক মহাতৃপ্তিতে।

সব ছেলে ঘরে ফেরে

‘আমার সোনা কোথায়!’

আশংকায় মায়ের বুক ঢিপঢিপ করে।

আশংকাই সত্য হয়।

তার ছেলের দুই পা-ই

গ্রেনেডে উড়ে যায়।

মৃত্যুর আগে কপালে সে

হাত দিয়ে ঢুঁড়েছিল মায়ের চুমুকে।

সেই হাত সার মুখে বুলিয়ে

সে ডেকেছিল ‘মা!’

সে আল্লাহ বলার সুযোগ পায়নি

তার শেষ ডাক, ‘মা!’

মায়ের পায়ের নিচেই না বেহেস্ত!

মায়ের দুঃখ দুদিন পরে জমাট বেঁধে যায়

দুঃখের কালশিরাটাও

ক্রমে ক্রমে তার রেখও

যে হারায়।

মুক্তিযুদ্ধের কথা ভাবতে বুক ভরে যায়

মুক্তিযুদ্ধের কথা ভাবতে বুক খালি হয়ে যায়।

সূত্র: ২৬ মার্চ ২০০৯ প্রথম আলোর "স্বাধীনতা দিবস" বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত