বিজ্ঞাপন
default-image

খিজির বিরক্ত হয়ে বলে, ‘তাইলে হালায় বইয়া বইয়া খোয়াব দ্যাখেন! আমি যাইগা।’

খিজিরের তাড়া আছে। কারণ, সে জানে যে কোথায় যাবে।

কিন্তু আমি কি আর অত সহজে নড়তে পারি? নাকি খিজিরের কথামতো সঙ্গে সঙ্গে দৌড় লাগানো আমার সাজে? আমি তো পেস্ট দিয়ে দাঁত মাজি, ফ্যানের বাতাস ছাড়া গরমের দিনে-রাতে ঘুমাতে পারি না, এখন তাতেও কুলায় না—এসি চালালে ভালো হয়, ঠান্ডা কোকা কোলা খেতে পছন্দ করি এবং মাঝেমধ্যে খাই, ইন্ডিয়া-পাকিস্তানের ক্রিকেট খেলা থাকলে ওই দিন অন্য কাজ ভালো লাগে না, প্যালেস্টাইনের ওপর ইহুদি হামলায় নিদারুণ মনঃক্ষুণ্ন হই এবং কেজিতে দুই-পাঁচ টাকা বেশি দিয়ে হলেও চিকন চালের ভাত খাই। আমা হেন মানুষ কি আর হাড্ডি খিজিরের কথায় হুটহাট বেরিয়ে পড়তে পারে? আমি বরং তাক থেকে বই নামিয়ে পড়তে শুরু করি। বই পড়া মানে হলো জ্ঞান অর্জন। আর জ্ঞান অর্জন হলে কোথায় যাওয়া উচিত তা বোঝা যায় এবং পদযাত্রার একটা মানচিত্রও পাওয়া যেতে পারে।

খিজির আবার বলে, ‘আরে কী সব কিতাব-উতাব পড়বার লাগছেন! মিছিল তো দূরে চইলা যাইতাছে!’

যাক। মিছিল আর কত দূরে যাবে! তা ছাড়া মিছিলে গেলেই তো শুধু হলো না, মিছিলের গতিপথ বলে দিতে হবে না? বলে দেবার লোক লাগবে না? গতিপথ বলে দেবার লোক না থাকলে মিছিল তো সোজা গিয়ে ধাক্কা খাবে পাথুরে দেয়ালে কিংবা ঝপাৎ করে পড়বে গিয়ে বঙ্গোপসাগরে।

তা ছাড়া মিছিলে গিয়ে হবেটা কী?

তার চেয়ে বই পড়তে পড়তে একটু অতীত থেকে ঘুরেও আসা যায়।

জলকলের ডান পাশ দিয়ে আইয়ুব খানের বানানো ষাট-ফুটি পিচপাথরের রাস্তা দূরের জেলার দিকে রওনা দিয়ে ঠিক উপজেলা পরিষদের তোরণের সামনে মিলেছে পাগলা রাজার রাস্তার সঙ্গে। পাগলা রাজার রাস্তা লম্বালম্বিভাবে অবশ্য বেশি বড় নয়, তবে বিস্তারে আইয়ুব খানের রাস্তার সঙ্গে ভালোভাবেই পাল্লা দেয়। জনশ্রুতি, এই রাস্তায় নাকি রাজার ছয় হাতি পাশাপাশি হাঁটত মাহুতের তত্ত্বাবধানে, বৈকালিক ভ্রমণে বেরিয়ে। শহরের ঘোষপাড়ার প্রতিষ্ঠাতা আদি ঘোষের ঘি খাঁটি না ভেজাল মেশানো, তা নির্ণয় করেছিল রাজার কোনো এক হাতিই। খাঁটি ঘি নাকি পুংজননাঙ্গে মালিশ করার সঙ্গে সঙ্গে হাতি পেচ্ছাপ করে দেয়। এটা নাকি হাতিসমাজের এক মহান বৈশিষ্ট্য। তো খাঁটি ঘি তৈরির সুবাদে হাতির পেচ্ছাপ করায় রাজা প্রীত হয়ে নিজে রাজবাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় পরিমাণ ঘি পারিতোষিকসহ সংগ্রহ করার পাশাপাশি নারদ নদের দক্ষিণ পারে ঘোষপাড়া প্রতিষ্ঠার অনুমতি দিয়েছিলেন। রাজার রাস্তায় এখন হাতির চলাচল থাকার প্রশ্নই ওঠে না। তবে মনুষ্য চলাচল এখনো একটি প্রবহমান বাস্তবতা। পাগলা রাজার রাস্তার দুই ধারে শিরীষগাছের সারি। হাঁটতে গেলে যদি মৃদুমন্দ বাতাস থাকে তাহলে শিরীষসংগীত শোনা যেত নিশ্চিত। যেত, বলার কারণ এখন আর ওই শিরীষগাছগুলো নেই। জলকলের বাম পাশ দিয়ে হর্টিকালচার প্রজেক্ট পেরিয়ে ডোমপাড়া মাঠের কালভার্ট পর্যন্ত পৌঁছাতেই শেষ হয়ে যায় রাজার রাস্তা। কালভার্ট থেকে সরু ইট-কংক্রিটের আধুনিক রাস্তা। রাস্তার দুই ধারে বনলতা বালিকা বিদ্যালয়, সমবায় বিভাগের অফিস, রাজা প্রতিষ্ঠিত দাতব্য চিকিৎসালয়, যা এখন উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র, নতুন নতুন বসতবাড়ি, ফার্নিচারের কারখানা, বরফকল, নগরবাসীর মননচর্চার চিহ্ন হিসেবে গড়ে ওঠা সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের পাশে ডা. কায়েসউদ্দিনের বিষণ্ন হোমিওপ্যাথির দোকান; সেখানেই আমি জীবনে প্রথম একজন কমিউনিস্টকে চাক্ষুষ করি দৈনিক সংবাদ পাঠরত অবস্থায়।

তখন দৈনিক ইত্তেফাক-এর রমরমা। পাড়ার দোকানে বসার অনুমতি নেই। বিন্তু দাঁড়িয়ে পেপার পড়া যায়। কিছুদিন রাজনীতি করা পাড়ার স্বনামখ্যাত জুয়াড়ি সিরাজুল চাচা আমাদের সেই সেভেন-এইটে পড়া বয়সেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন পেপারের শাঁস হচ্ছে তার উপসম্পাদকীয় কলাম। বিভিন্ন বিষয়ে লেখা হয় উপসম্পাদকীয়তে। কিন্তু একটি বিষয় থাকবেই। তা হচ্ছে কমিউনিস্টদের গালি দেওয়া। সেই সঙ্গে বোঝানোর চেষ্টা করা যে কমিউনিস্টরা হচ্ছে ভয়ানক মানুষ, দেশের এবং জাতির ধ্বংসই কমিউনিস্টদের একমাত্র ধ্যানজ্ঞান, এমনকি মিলিটারিও ভয় পায় কমিউনিস্টদের।

সিরাজুল চাচার কাছে জানতে চেয়েছিলাম, আমাদের শহরে কমিউনিস্ট আছে কি না। উনি নাম বলেছিলেন। এবং ঘটনাক্রমে একদিন হোমিওপ্যাথির দোকানে বসে থাকা কমিউনিস্টকে দেখিয়েও দিয়েছিলেন।

আমি তো থ!

এই লোক নাকি ভয়ংকর!

নিরীহ গোবেচারা গোছের মানুষ, মাঝারি উচ্চতা, বয়স প্রৌঢ়ত্ব ছুঁয়েছে, মুখে সরলতার ছাপ, হেসে হেসে গল্প করছে ডাক্তারের দোকানের বেঞ্চিতে বসে থাকা আরও জনা তিনেক লোকের সঙ্গে। হাতে দৈনিক সংবাদ

প্রাক্‌-তারুণ্যের ওই বয়সে, ওই দিনই আমি বুঝে গেলাম যে কোনো একটি মিথ্যার সামনে আমি দাঁড়িয়ে আছি। হয় ওই কমিউনিস্ট লোকটি মিথ্যা; নাহয় দৈনিক ইত্তেফাক মিথ্যা।

কারণ, কয়েক দিন আগেই, যখন পাগলা রাজার রাস্তার শিরীষবৃক্ষ নিধনপর্ব চলছিল, ওই লোকটাকে দেখেছিলাম বৃক্ষনিধনের প্রতিবাদে বাড়ি বাড়ি ঘুরে স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে। বৃক্ষের প্রতিও যাদের এত ভালোবাসা তারা, মানবজাতির এত বড় দুশমন হয় কীভাবে?

‘ওই লোক থেকে দূরে থাকিস!’—সিরাজুল চাচা তো বলেনই, আব্বাও সতর্ক করে দেন।

‘ওই লোকের কাছে ভিড়লে অসুবিধা কোথায়?’—এই প্রশ্নের উত্তরে বহুদর্শী গৃহঅন্তঃপ্রাণ বাপ-চাচারা বলেন যে ‘ওই লোকের কাছে গেলে সে তোদেরও কমিউনিস্ট বানিয়ে ছাড়বে। আর কমিউনিস্ট হলে তার ইহকাল-পরকাল দুই-ই শেষ!’

সর্বনাশ! এমন একটা বিপজ্জনক মানুষকে এই লোকালয়ে বাস করতে দেয় কেন শহরের মানুষ?

আমরা কমিউনিস্টের প্রতি এতই আকর্ষিত বোধ করি যে তাঁর কাছে ঘেঁষবার জন্য আমাদের মগজের মধ্যে পরিকল্পনা তৈরি হতে থাকে অবিরাম।

প্রথমে পরিকল্পনা করা হলো, তাঁর ছেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তোলা হবে। কিন্তু তাঁর ছেলে থাকলে তো! বিয়েই করেনি লোকটা।

আমাদের অন্য পরিকল্পনাগুলোও কাজে আসে না। তখন আমরা আবার ধরি সেই সিরাজুল চাচাকেই। কিন্তু রাজি করাতে পারি না। উল্টো সিরাজুল চাচা আমাদের যে গল্প শোনান, তা শুনে আমরা তো থ। এই জেলার প্রধান সরকারি নেতা, যে এখন জেলার হর্তাকর্তাবিধাতা, সেই নেতাও নাকি তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে এই কমিউনিস্টেরই শিষ্য ছিলেন। কাজেই সবার চেয়ে সে-ই সবচেয়ে ভালো জানে এই লোক কতখানি বিপজ্জনক। পরিস্থিতি আঁচ করতেও তাঁর কোনো জুড়ি নেই। রাজনীতির সবচেয়ে ভালো গুরুর কাছে শিক্ষা পেয়েছেন যে। সেই নেতার একটি গল্প শোনান সিরাজুল চাচা। সেই গল্প শুনে আমরা এতই ভয় পেয়ে যাই যে ভয়ে আমাদের হাত-পা পেটের মধ্যে সেঁধিয়ে যেতে চায়। ফলে আমাদের আর কমিউনিস্টের কাছে যাওয়া হয়নি। আর কোনো মিছিলেও যাওয়া হয়নি।

কিন্তু হাড্ডি খিজিরকে এখন নিরস্ত করি কীভাবে? সে যে নিরন্তর তাড়া দিয়েই যাচ্ছে! আর তাড়া দেবেই না বা কেন। একটু দেরি করলেই কারও জন্য অপেক্ষা না করে মিছিল এগোতে শুরু করবে। পেছন থেকে দৌড়ে মিছিল ধরা প্রায় অসম্ভব। মিছিল ততক্ষণে ফুলে-ফেঁপে বিশাল হয়ে গেছে। সেই উনসত্তর সালে গওসল আজম শ‌ু ফ্যাক্টরির শ্রমিকেরা শুরু করেছিল মিছিল। এখন এগলি-ওগলি থেকে মানুষ আসতে শুরু করেছে। নবদ্বীপ বসাক লেনের পেছন দিকের বস্তি থেকে আসছে মানুষ, পাঁচভাই ঘাট লেনের শামসুদ্দীনের রুটি কারখানার লোকজন বেরিয়ে এসেছে তন্দুরের ওম ছেড়ে, হৃষিকেশ দাস রোডের গ্যারেজ থেকে আসছে রিকশাওয়ালার দল, ঠাকুরদাস লেনের মানুষ আসছে কলুটোলার মিছিলের সঙ্গে যোগ দিয়ে, ঈশ্বরদাস লেনের মানুষ আসছে বাণী ভবনের কলেজ ছাত্রদের সঙ্গে, মিউনিসিপ্যালিটি অফিসের পেছনের মুচিপাড়ার এত এত ছেলে আসছে মিছিলে যোগ দিতে। এই বছরের মার্চে শাহবাগকে মিলিয়ে নিয়ে কত লোক যে হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। তবু খিজির সন্তুষ্ট নয়। কাউকে সে মিছিলের বাইরে থাকতে দিতে রাজি নয়। খিজির বাইরে গিয়ে একবার কলোনিবাড়ির জানালাগুলো লক্ষ্য করে চেঁচিয়ে বলে এসেছে, ‘বিবিজানের সিনার মইদ্যে খোমাখান ফিট কইরা নিন্দ পাইড়েন না ভাইসাবেরা, মরদের বাচ্চা মরদ হইলে রাস্তায় নামেন!’

এত বড় ভর্ৎসনার পরেও আমার পায়ের ওপর শরীর দাঁড়াতে চায় না।

আমরা তো অগ্নিগর্ভ সময়ের দিকে পিঠ ফিরিয়ে বসতেই অভ্যস্ত। তবে একটু লজ্জিত হাসিও ফোটে। হাসি দেখে খিজির ধমকের মতো বলে ওঠে, ‘মাইদ্যা মানুষের লাহান একলা একলা হাসেন ক্যালায়? আহেন মিছিলে আহেন!’

তখন আমাকে প্রায় উঠে দঁাড়াতে হয়।

কিন্তু সেই সঙ্গে একটা কথা মনে হতেই ভয়ানক চমকে উঠি।

খিজির না মারা গেছে মিছিলে গুলি খেয়ে!

‘খিজির তুমি না মারা গেছ? রাতের মিছিলে মারা গেছ। ভোর তিনটা বাজার আগেই তোমার তোমার হাঁ-করা মুখের ওপর বড় বড় মাছি ভোঁ ভোঁ করে ঘুরছিল। জুম্মন নিজের চোখে দেখেছে তোমার লাশকে মিলিটারি-ট্রাকে ওঠাতে।’

‘তাতে হইছেডা কী বাল! ওগোর মারণের কাম, ওরা মারছে। আমার মিছিলকরণের কাম, আমি মিছিল করবার আইছি। চলেন তো অহন! আর দেরি কইরেন না!’

আমি তখনো অবাক হয়ে, কিছুটা ভীত চোখেই হাড্ডি খিজিরকে দেখতে থাকি। মনে পড়ে, তাকে এই চেহারাতে দেখেছিলাম ঈদের দিন। সেই ঈদের দিনটাতে হাড্ডি খিজির মুসলমানের সন্তান হওয়ার জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছিল। খুব ভোরে উঠে রাস্তার কলে ৫৭০ সাবান দিয়ে গা কচলে গোসল করেছিল। গায়ে চড়িয়েছিল আলাউদ্দিন মিয়ার দেওয়া বুকে সাদা সুতোর মিহি কাজ করা আদ্দির পাঞ্জাবি। সেটার ডান হাতের কবজির কাছে একটু ছেঁড়া। তাতে খিজিরের কোনো অসুবিধা হয়নি। হাতাটা একটু গুটিয়ে নিলেই হলো। বউয়ের নারকেল তেল বের করে নিজে নিজে মাথায় মেখেছিল। তাও ছটাক খানেকের কম না। তার কপাল ও জুলফি দিয়ে তেল গড়িয়ে পড়ছিল সেই শীতের সকালেও। মহাজনের বাড়িতে হাতের কাছে পেয়ে গিয়েছিল সুরমাদানি। তা থেকে ইচ্ছামতো সুরমা মেখেছিল দুই চোখে। আতর মেখেছিল পাঞ্জাবির গলা থেকে ঝুল পর্যন্ত। সেই আতর-সুরমা-নারকেল তেল এখনো লেপ্টে আছে খিজিরের গায়ে। দাফনের আগে মুর্দা গোসল দেওয়ার সময়ও মুছে ফেলা যায়নি।

এইবার খিজির আমাকেও মুখ খিস্তি করতে থাকে, ‘আরে আহেন না! কত মানু বারাইয়া আহে। আপনে দেহি দিন নাই, রাইত নাই, হোগাখান উপ্তা কইরা একবারে চৌকির লগে ঠেকাইয়া খালি খোয়াব দ্যাহেন! ওঠেন! গতরডা ঝাড়া দেন!’

তাতে আমি বেজায় শরম পেয়ে যাই। কিন্তু আমার দ্বিধা তখনো শরমের চাইতে শক্তিশালী। বাইরে অন্ধকার। বাইরে অরণ্য-ভয়। ঘরে বসে আগে একটা সমাধান খোঁজা হোক না!

কিন্তু খিজির আর সময় দিতে রাজি না। শেষবারের মতো ডাকে, ‘আহেন, বারাইয়া আহেন। অ ওসমান সাব, আহেন না!’

ঠিক সেই মুহূর্তেই আমার ঘোর কাটে। নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গের মতো আমি বুঝতে পারি কোথায় আমার বাধার শিকড়। আমি করুণ আবেদনে খিজিরকে বলি, ‘আমাকে ওসমান বানিয়ো না খিজির। ওসমানরা বেশিক্ষণ মিছিলে থাকতে পারে না। বেশিক্ষণ বাস্তবে থাকতে পারে না। তারা পরাবাস্তবে পালায়। তুমি আমাকে আনোয়ার বানাও খিজির!’

খিজিরের ঠোঁটে ব্যঙ্গের হাসি, ‘চাইলেই আনোয়ার হওন যায়!’

আমি তখন আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের সামনে নতজানু হই, ‘আপনি তো স্রষ্টা! বেশি বেশি আনোয়ার বানান! বেশি বেশি খিজির বানান! জাতিটা বাঁচুক!’

জাকির তালুকদার: কথাশিল্পী।

সূত্র: ২৬ মার্চ ২০১৫ প্রথম আলোর "স্বাধীনতা দিবস" বিশেষ সংখ্যায় প্রকাশিত