বিজ্ঞাপন
default-image

সে সময় আমি বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান ভাষ্যকার হিসেবে কাজ করতাম। তাই আমি জড়িয়ে গিয়েছিলাম। এই চাকরির সুবাদেই তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে হত্যাযজ্ঞের পর প্রথম সাংবাদিক দলের সদস্য হিসেবে সেখানে ঢুকতে পেরেছিলাম। আমি অনেকটাই বাধাহীনভাবে দেশজুড়ে চষে বেড়িয়েছি।

পিবিএসও [পািকস্তান ব্যুরো অব স্ট্যাটিসটিকস] ছিল এই দলে। তবে তারা গিয়েছিল অনেকটা দাপ্তরিক সফরের মতো। খুব একটা মুক্তভাবে ঘুরতে পারেনি। তাই সেনাবাহিনীর চালানো হত্যাযজ্ঞ বাংলাদেশের জনমনে কী প্রভাব ফেলছে, সেটি তুলে ধরা সাংবাদিকদের মধ্যে ছিলাম আমি। ভবিষ্যতে কী ঘটতে চলেছে, তা আমি আঁচ করতে পেরেছিলাম।
আমরা হত্যাযজ্ঞের প্রমাণ দেখতে পেয়েছিলাম। সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের প্রমাণ জোগাড় করতে পেরেছিলাম। আমরা দেখেছি, সেনাবাহিনী কীভাবে ক্যান্টনমেন্ট থেকে সশস্ত্র অবস্থায় বেরিয়ে আসছিল। আমরা দেখেছি, কেমন ক্ষতি হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ক্ষতিসাধন করা হয়েছে, তা–ও আমরা দেখেছি। ঢাকা থেকে রাজশাহী যাওয়ার সময় রাস্তার পাশের গ্রামগুলোকে দেখেছি ভস্মীভূত অবস্থায়। এটা স্পষ্ট ছিল যে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী নির্বিচার আগুন দিয়েছে। তারা গ্রামের পর গ্রাম উজাড় করেছে, যাতে মানুষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারে।

আমি একাত্তরের নভেম্বরে ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নিয়েছি। তিনি সে সময় লন্ডনে ছিলেন। সাক্ষাৎকারে তিনি যুক্তিসংগত এবং অত্যন্ত শক্তিশালী বার্তা দিয়েছিলেন। পশ্চিমা বিশ্বের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘তোমরা যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নাও, তাহলে আমাদেরই কিছু একটা করতে হবে।’ তিনি মূলত এই বার্তাই দিতে চেয়েছিলেন আর সেটি দিয়েছিলেন খুব সহজে, কিন্তু বেশ দৃঢ়তায় ও চমৎকারভাবে।

আমার অবশ্য মনে হয় না যে ভারত এমন অবস্থানে ছিল, যেখান থেকে তারা ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা প্রতিরোধ করতে পারত। কারণ, পাকিস্তান সেনাবাহিনী স্পষ্টতই পূর্ব পাকিস্তানে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে মরিয়া ছিল। পশ্চিমা বিশ্ব ও অন্যান্য দেশ, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে খুব একটা সক্রিয় ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র উল্টো সক্রিয়ভাবে পাকিস্তানকেই সহযোগিতা করছিল। এ অবস্থায় ভারতের কিংবা ইন্দিরা গান্ধীর কীই–বা করার ছিল? কেউ হয়তো বলতে পারে যে ইন্দিরা গান্ধী তো খুব সহজেই বলে দিতে পারতেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে দাও, কোনোভাবেই এতে জড়িয়ে যেয়ো না, মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িয়ে পোড়ো না। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানে তা প্রচণ্ড জটিলতা সৃষ্টি করত। পশ্চিম পাকিস্তানের সেনাবাহিনী তাহলে পূর্ব পাকিস্তানকে সামরিক উপনিবেশে পরিণত করত।

আমার মনে হয়, আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এখানকার পরিস্থিতি নিয়ে বিশদ খবর পরিবেশন করেছে। আমেরিকান সংবাদমাধ্যমগুলোও। এ কারণেই তাদের সরকার এখানকার পরিস্থিতি নিয়ে ততটা সক্রিয় হতে পারেনি। আমি তখন প্রতিদিনই নতুন নতুন প্রকাশিত সংবাদ–প্রতিবেদনগুলো পড়ছি, বিবিসির জন্য নিজের ভাষ্য তুলে ধরছি। আমাকে বলতেই হবে, বাংলাদেশি সংবাদদাতারাও অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে প্রচুর সংবাদ সংগ্রহ ও সরবরাহ করছিলেন। বিবিসির তৎকালীন সংবাদদাতা নিজাম উদ্দীনকে তো পাকিস্তান সেনাবাহিনী হত্যাই করল। সেনাদের হত্যাযজ্ঞের শিকার বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে তিনিও ছিলেন।
বঙ্গবন্ধুর প্রতি বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন ছিল অকুণ্ঠ। তিনিই ছিলেন দেশের একচ্ছত্র নেতা। ছিলেন জনগণের অনুপ্রেরণাও। এর প্রমাণ আপনি পাবেন তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের সময় তাঁকে বিশাল জনসমুদ্রের মধ্যে বরণ করে নেওয়ার মধ্যে। স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের কিছুদিন পরই আমি তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম।

তবে যুদ্ধ–পরবর্তী পরিস্থিতি ছিল অসম্ভব কঠিন। বহু সমস্যার একটি ছিল অবকাঠামোগত। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। যুদ্ধের সময় সেতু ও ফেরিগুলো ধ্বস্ত হয়েছে, রেলব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বলা যায়, দেশের পুরো অবকাঠামোই ভেঙে পড়েছিল।

default-image

এর বাইরে ছিল রাজনৈতিক সমস্যা। একটি সমস্যা ছিল মুক্তিবাহিনী নিয়ে। তাদের কী করা হবে? সেনাবাহিনীতে তাদের কতজনকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে, সেনাবাহিনীর আকার কেমন হবে—এসব প্রশ্ন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছিল। মুক্তিবাহিনীর অনেক সদস্যের মধ্যে হতাশা ভর করেছিল।

এ ছাড়া ব্যাপক খাদ্যসংকট তো ছিলই। তখন দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি চলছে। আমি পশ্চিমবঙ্গে এই দুর্ভিক্ষ প্রত্যক্ষ করেছি। আমি দেখেছি, কীভাবে ক্ষুধার্ত মানুষ কোচবিহারের সড়কে মরে পড়ে থেকেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পরাজয়ের পরপর সবাই আনন্দে ভেসে গিয়েছিল। সামনের কঠিন পরিস্থিতি তখনো অনুধাবন করতে পারেনি। বাংলাদেশের মানুষ ভাবছিল, ‘আমরা এখন মুক্ত। সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।’ তাদের ধারণা ঠিক ছিল না।

ভারতীয় সেনাবাহিনী যখন পূর্ব পাকিস্তানে প্রবেশ করে, তখন আমি লন্ডনে। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর আমি তাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলাম। আমি জানতাম, ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রতি বঙ্গবন্ধু ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞ ছিলেন। বাংলাদেশের জনগণও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ ছিল। তবে আমাকে স্বীকার করতেই হবে, বাংলাদেশের মানুষও ব্যাপক ঝুঁকি নিয়েছিল। মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে তারা বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল। আর এটা তো সত্য যে মুক্তিবাহিনী ব্যাপক প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল।

তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সেই সংকটের কোনো রাজনৈতিক সমাধান খুঁজে পাওয়া ছিল অত্যন্ত কঠিন। কারণ, সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের পর বাংলাদেশের মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল। তারা নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিল। তাদের দাবি ছিল, তাদের সরকার গঠন করতে দিতে হবে। কিন্তু জুলফিকার আলী ভুট্টো এটা মেনে নিতে রাজি ছিলেন না। কাজেই সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় বেরিয়ে এল। কিন্তু সেটা কোনো সমাধান ছিল না।

বাংলাদেশের মূল সমস্যার সূত্রপাত দেশভাগের পর। সে সময় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বাংলাদেশে এসে ঘোষণা দিলেন, উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। তখন থেকেই বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা ও অস্বস্তির সূত্রপাত।

আমার মনে হয়, যুদ্ধের ভয়াবহতা নথিবদ্ধ করা দরকার। অতীতের বিষয় ভুলে যাওয়া এবং ক্ষমা করে দেওয়াও অপেক্ষাকৃত ভালো সমাধান।

মার্চের হত্যাযজ্ঞের পর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে একদল সাংবাদিককে পূর্ব পাকিস্তানে নেওয়া হলো। আমি ছিলাম সাংবাদিকদের প্রথম দলে। পাকিস্তান থেকে সাংবাদিকদের যে দলটি এসেছিল, তারা খুব বেশি কিছু দেখতে পারেনি। পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন মনে করল যে তারা নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে, তারা আরেক দল সাংবাদিককে অনেকটা মুক্তভাবেই দেশজুড়ে ঘোরার সুযোগ দিল। আমি সে দলে ছিলাম। খুব একটা বাধা পাইনি। আমি তো গ্রামাঞ্চল পর্যন্ত পৌঁছে যেতে পেরেছিলাম। আমি রাজশাহী গিয়েছিলাম।

বাংলাদেশের মানুষ তখন প্রচুর বিবিসি শুনত। এটা দারুণ একটা ব্যাপার ছিল। সে সময় পাকিস্তান রেডিও ছিল, অল ইন্ডিয়া রেডিও ছিল। কিন্তু পাকিস্তান রেডিও পাকিস্তানের দৃষ্টিকোণ থেকে সংবাদ পরিবেশন করত। অল ইন্ডিয়া রেডিও তুলে ধরত ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গি। সে কারণে বিবিসিই ছিল মূল বিদেশি সংবাদমাধ্যম। আমরা জনগণের বিশ্বাস এ প্রত্যাশা তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা প্রকৃত সংবাদ উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কাজেই বাংলাদেশে অনেক মানুষই বিবিসি শুনত।

তবে পশ্চিম পাকিস্তানে ছিল উল্টো দৃশ্য। এ ধরনের পরিস্থিতিতে অবশ্য এমনটাই হয়। আমার মনে আছে, পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষ বিবিসির যেসব নাম দিয়েছিল, তার তালিকা প্রকাশ করেছিল পাকিস্তান রেডিও। এমন একটি নাম ছিল ‘ভারত ব্রডকাস্টিং করপোরেশন’। বিবিসির আরেকটি নাম দেওয়া হয়েছিল ‘ব্রিটিশ বাকওয়াস করপোরেশন’। এসব নাম পশ্চিম পাকিস্তানে বিবিসির ব্যাপারে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিরই নমুনা।
বিবিসি, অল ইন্ডিয়া রেডিও এবং অন্যরা যেসব সংবাদ পরিবেশন করত, পাকিস্তান রেডিও সেসব উড়িয়ে দিতে ও প্রত্যাখ্যান করতেই ব্যস্ত ছিল বেশি। কিন্তু এভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনসমাজকে, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালি সমাজকে প্রভাবিত করা সম্ভব ছিল না।

মার্কিন সরকার মূলত পাকিস্তান সরকারকে সমর্থন করছিল। এদিকে ভারত শান্তি ও বন্ধুত্বের চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে। সে কারণে কেউ কেউ ভেবেছিল, ক্ষমতার একটা ভারসাম্য তৈরি হবে। আমার ধারণা হয়েছিল, পশ্চিমা বিশ্বে জনমত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। তারা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বাঙালিদের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিল। এর অনেক উদার উদাহরণও রয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলে মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু তিনি পুরোপুরি ভুল প্রমাণিত হয়েছেন। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশের সব ধরনের জরুরি সহযোগিতার প্রয়োজন ছিল। বাংলাদেশ ভালো সাড়াও পেয়েছিল।
আমার মনে হয়, শুরু থেকেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী গভীর সমস্যায় পড়েছিল। এটাও ঠিক যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কিছু নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেলেও সেটি সন্তোষজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করত না। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে কোনো শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব ছিল না। পাকিস্তানের ভাঙন যে নিশ্চিত, তা বেশ আগেই বোঝা গিয়েছিল।
সে সময় সাংবাদিকদের মূল চ্যালেঞ্জ ছিল তথ্য সংগ্রহ এবং সে তথ্যের নিরাপত্তা ও ভারসাম্য রেখে সংবাদ পরিবেশন করা। এ ধরনের সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতিতে যেকোনো এক পক্ষের দিকে হেলে পড়া খুব সহজ। প্রত্যেক সাংবাদিককেই তাই ভারসাম্য রেখে খুবই সতর্কভাবে কাজটা করতে হয়েছে।

default-image

যুদ্ধের সময়টাতে ভারতও সমস্যায় পড়েছিল। বিপুলসংখ্যক শরণার্থী সে দেশে আশ্রয় নিচ্ছিল। বাংলাদেশের সমস্যায় ভারতের জড়িয়ে যাওয়ার পেছনে এই কারণই ছিল যথেষ্ট। তারা সক্রিয় সহায়তা দিয়েছে। বিপুলসংখ্যক শরণার্থী সংকটের বিষয়টি ভারতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সমাধান করতে হতো। তারা সেই নীতির পেছনেই ছুটেছিল। কিছু মানুষ ভারতের পদক্ষেপের সমালোচনা করেছিল। কেউ কেউ বলেছিল, যুদ্ধে ভারতের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। আবার অনেকে বলছিল, এ ছাড়া ভারতের হাতে কোনো বিকল্পও নেই। কারণ, বিপুলসংখ্যক শরণার্থী সে দেশে আশ্রয় নিচ্ছিল।

যুদ্ধের পর আমার ভারতীয় সেনাবাহিনীর দুজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার সংস্পর্শে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। একজন জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা, ভারতীয় সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান ছিলেন। আরেকজন জেনারেল জে এফ আর জ্যাকব। তিনি ছিলেন অরোরার সহযোগী। তাঁরা আমাকে সে সময়কার অনেক ঘটনা বলেছেন। যুদ্ধে ভারতের পদক্ষেপ নিয়ে ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ যে কতটা যথার্থ ছিলেন, সে কথা তাঁরা সব সময়ই বলতেন। তিনি ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন, পূর্ব পাকিস্তানে ভারতীয় সেনাদের অভিযান বিলম্বিত করতে হবে। তাঁদের তখনই অভিযান শুরু করা উচিত, যে সময়টিতে তাঁরা অভিযানের জন্য প্রস্তুত হবেন। এটি ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত।
আমার মনে আছে, ভারত একেবারে আন্তর্জাতিক নিয়ম মেনে যুদ্ধবন্দীদের বিষয়টি সুরাহা করেছে। ইন্দিরা গান্ধী এই বন্দীদের দীর্ঘ সময় আটকে রাখার পক্ষে ছিলেন না।

আমার মনে হয়, যুদ্ধের ভয়াবহতা নথিবদ্ধ করা দরকার। অতীতের বিষয় ভুলে যাওয়া এবং ক্ষমা করে দেওয়াও অপেক্ষাকৃত ভালো সমাধান। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, যুদ্ধপরবর্তী সময়ে সবচেয়ে দ্রুত যে কাজটি করা উচিত, তা হলো সম্প্রীতির পরিবেশ সৃষ্টি করা। কাজটি সহজ নয়। বহু মানুষই ভিন্নমত পোষণ করে বলবেন, অপরাধীর সাজা তো হতেই হবে। তবে আমি নিশ্চিত নই, দীর্ঘ মেয়াদে সেটি কোনো কাজে আসে কি না।