মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নতুনভাবে তালিকাভুক্ত হতে ন্যূনতম ১৩ বছর বয়স নির্ধারণ প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক আবেদনের শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার এ রুল দেন।
রুলে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তারিখে ন্যূনতম ১৩ বছর হতে হবে—মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনের এই অংশ কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আদালতে আবেদনকারীপক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ বি এম আলতাফ হোসেন ও আইনজীবী এ কে এম ফজলুল করিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
আবেদনকারীপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মানী ভাতা বন্ধ হওয়ার প্রেক্ষাপটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এক বছর চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর জন্য মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে আবেদন করেন তৎকালীন উপহিসাব মহানিয়ন্ত্রক (পদ্ধতি) খন্দকার সহিদুল ইসলাম। গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত উপমহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (প্রশাসন) এক চিঠিতে সহিদুলকে জানান, মুক্তিযোদ্ধার সপক্ষে কাগজপত্র যথাযথ না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সহিদুলকে প্রত্যয়ন করা যায়নি। তখন ভাতা বন্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চাকরির মেয়াদ না বাড়ানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত ৯ জুলাই হাইকোর্টে রিট করেন সহিদুল। যার ভাষ্য, ভারতীয় তালিকায় ও লাল মুক্তিবার্তায় তাঁর নাম আছে এবং মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১৯৮১ সালের ২৩ মার্চ তিনি অডিটর পদে নিয়োগ পান।
এরপর ‘মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা ও বয়স নির্ধারণ’ বিষয়ে গত বছরের ১০ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনের ২ নম্বর দফায় বলা হয়, মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নতুনভাবে অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত ন্যূনতম ১৩ বছর হতে হবে। এ নিয়ে সহিদুল ইসলাম সম্পূরক আবেদনটি করেন, যার ওপর শুনানি নিয়ে গতকাল আদেশ দেওয়া হয়।
সূত্র: ২২ নভেম্বর ২০১৭, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪২৪, বুধবার, প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।