মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর
জন্ম: ১৯৪৯ সালের ৭ মার্চ, বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার রহিমগঞ্জ গ্রামে। ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন। ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে পাকিস্তান থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। তখন তাঁর পদবি ছিল ক্যাপ্টেন। ৭ নম্বর সেক্টরের মাহদীপুর সাব-সেক্টরের অধিনায়ক ছিলেন। ১৪ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর দখলের যুদ্ধে শহীদ হন। ১৫ ডিসেম্বর মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের মরদেহ ঐতিহাসিক সোনামসজিদ প্রাঙ্গণে সমাহিত করা হয়।
হামিদুর রহমান
জন্ম: ১৯৫৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি, পশ্চিম বঙ্গের চব্বিশ পরগনা জেলার ডুমুরিয়া গ্রামে। ১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে ভর্তি হন সিপাহি হামিদুর রহমান। ২৫ মার্চে চট্টগ্রাম প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে পালিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ২৮ অক্টোবর মৌলভীবাজারের ধলই বিওপি আক্রমণের সময় শহীদ হন। তাঁর মরদেহ প্রাথমিকভাবে আগরতলার আম্বাসার হাতিমারাছড়া গ্রামে সমাহিত করা হয়। পরে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয়।
মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল
জন্ম: ১৯৪৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর, ভোলা জেলার দৌলতখান উপজেলার পশ্চিম হাজীপাড়া গ্রামে। ১৯৬৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চে ৪ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ১৮ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার দরুইন গ্রামে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধরত অবস্থায় সিপাহি মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল শহীদ হন। মোস্তফা কামালকে দরুইন গ্রামেই সমাহিত করা হয়।
মো. রুহুল আমিন
জন্ম: ১৯৩৫ সালের জুন মাসে, নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার বাঘচাপড়া গ্রামে। ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগ দেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি ২ নম্বর সেক্টরে যোগ দেন। পরে মুক্তিবাহিনীর গানবোট ‘পলাশে’ ইঞ্জিনরুম আর্টিফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১০ ডিসেম্বর গানবোট পলাশ নিয়ে মংলা অভিযানকালে বিমান হামলায় শহীদ হন। তাঁর মরদেহ খুলনার রূপসা নদীর তীরে সমাহিত করা হয়।
মতিউর রহমান
জন্ম: ১৯৪৫ সালের ২৯ নভেম্বর, পুরান ঢাকায়। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ১৯৬৩ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে কমিশনপ্রাপ্ত হন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে যোগ দেন। পরে পরিবারের চাপে পাকিস্তানে চলে যেতে বাধ্য হন। সেখানে মশরুর বিমানঘাঁটিতে কর্মরত অবস্থায় ২০ আগস্ট প্রশিক্ষণ বিমান ছিনতাই করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেন। ছিনতাইকালে পাকিস্তানি শিক্ষার্থী রাশেদ মিনহাজের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তিনি শহীদ হন।
মুন্সী আবদুর রউফ
জন্ম: ১৯৪৩ সালের ৮ মে, ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানার সালামতপুর গ্রামে। তিনি ১৯৬৩ সালে ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসে যোগ দেন। ল্যান্স নায়েক মুন্সী আবদুর রউফ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। ২০ এপ্রিল রাঙামাটির বুড়িঘাটে পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে তিনি শহীদ হন। পরবর্তী সময়ে তাঁকে বুড়িঘাটে সমাহিত করা হয়।
নূর মোহাম্মদ শেখ
জন্ম: ১৯৩৬ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি, নড়াইল জেলার মহিষখালী গ্রামে। তিনি ১৯৫৯ সালের ১৪ মার্চ ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসে যোগ দেন। ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ মার্চ মাসে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মুক্তিবাহিনীতে যোগ দেন। ৫ সেপ্টেম্বর যশোরের গোয়ালহাটি গ্রামে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে তিনি শহীদ হন। তাঁকে সীমান্তবর্তী কাশিপুর গ্রামে সমাহিত করা হয়। সূত্র: বাংলাপিডিয়া, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি; একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রন্থ, জনতা ব্যাংক লিমিটেড; একাত্তরের বীরযোদ্ধা, প্রথমা প্রকাশন। প্রতিকৃতি: মাসুক হেলাল