বিজয় দিবস-১৬ ডিসেম্বর

পশুর নদীর তীরে

পাকিস্তানি বাহিনী ধর্ষণকে যুদ্ধকৌশলের অংশ করে নিয়েছিল

পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের সময় মংলার এক রাজাকার ছিল হাসেম গাজী। সে ছিল এমন নিকৃষ্ট, যা জানোয়ার বা পশুর মতো। তার ছেলে হুমায়ুন। আর সেখানকার এক শ্রমিক ইদ্রিস আলীর খোদেজা নামের এক মেয়ে ছিল।

সে সময়ের তরুণ মোকলেস রহমান হাশেমআলীর নৃশংসতার বর্ণনা দেন এভাবে, ‘গভীর রাতে ইদ্রিসদের বাড়িতে গিয়ে তাঁর মেয়ে খোদেজাকে তুলে আনে রাজাকারের ছেলে হুমায়ুন। তুলে এনে মংলা বন্দরের পশুর নদীর তীরে সিগন্যাল টাওয়ারের কাছে পাকিস্তানি হানাদারদের হাতে তুলে দেয়। হানাদারেরা খোদেজার ইজ্জত নষ্ট করে হত্যা করে। খোদেজার মৃত্যু ছিল খুবই কষ্টদায়ক। তাকে গলায় ছুরি দিয়ে এবং বিভিন্ন স্থানে ক্ষতবিক্ষত করে হত্যা করে শহরের দক্ষিণে পশুর নদীর তীরে বিবস্ত্র অবস্থায় ফেলে রাখে।’

পরদিন তার বাবা-মা তাকে খুঁজতে লাগলেন, কিন্তু কোথায় পাবেন তাঁদের হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে। কিছুদিন পর তাঁরা খোঁজ পেলেন। কিন্তু সে আর বেঁচে নেই। তার মর্মান্তিক অবস্থা দেখে মা চিত্কার করে আল্লাহর কাছে বললেন, ‘আল্লাহ তোমার কি কোনো বিচার নেই!’ খোদেজার মা পাগল হয়ে যান। এসব ঘটনায় শ্রমিক ইদ্রিসও পাগলপ্রায় হয়ে চিত্কার করেন, কান্নাকাটি করেন এবং তাঁর মেয়ের মৃত্যুর জন্য পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। এতে পাকিস্তানি হানাদারেরা তাঁকেও নির্মমভাবে হত্যা করে।

 সাদিয়া ইয়াসমিন কেয়া

সেন্ট পলস উচ্চবিদ্যালয়

শ্রেণী-সপ্তম, রোল-৭১২৭, মংলা, বাগেরহাট