বীরত্বসূচক খেতাবপ্রাপ্তদের তালিকা
মো. সাইফউদ্দীন, বীর প্রতীক
গ্রাম দেউলপাড়া, ইউনিয়ন পাইথন, গফরগাঁও, ময়মনসিংহ।
বাবা মফিজউদ্দীন, মা আজিমুন নেছা।
স্ত্রী আনোয়ারা বেগম। তাঁদের ছয় ছেলে ও দুই মেয়ে।
খেতাবের সনদ নম্বর ৮৬।
মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর নিজস্ব আর্টিলারি গঠন ও ব্যবহার একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। প্রশিক্ষণ শেষে এই ইউনিট প্রথম অপারেশন করে দক্ষিণগুলে। পরে এই ইউনিটের নাম হয় ‘রওশনআরা ব্যাটারি’। এই ইউনিটের কাছে ছিল ছয়টি ১০৫ মিলিমিটার কামান। এই অপারেশনের আগে বড়লেখার বিভিন্ন স্থানে মুক্তিবাহিনীর আর্টিলারি ইউনিট কামান নিয়ে অবস্থান নেয়। একটি কামান থেকে গোলা ছোড়ার দায়িত্বে ছিলেন মো. সাইফউদ্দীন।
দক্ষিণগুল চা-বাগান মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায়, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেখানে ঘাঁটি করে। এখানে ছিল পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ২২ বালুচ রেজিমেন্টের একাংশ। ১৯৭১ সালের অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একাংশ দক্ষিণগুল চা-বাগানের পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অবস্থানে আক্রমণ করে। তখন মুক্তিবাহিনীর একদল সেনা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঘেরাওয়ের মধ্যে পড়ে যান।
ওয়্যারলেসে আর্টিলারিকে বলা হয় পাকিস্তানি অবস্থানের ওপর গোলাবর্ষণের জন্য। ছয়টি কামানের মধ্যে কেবল মো. সাইফউদ্দীনের কাছে থাকা কামানটিই ছিল পাকিস্তানি অবস্থানের আওতায়। নির্দেশ পেয়ে তিনি অনেক উত্কণ্ঠা ও উদ্বেগের সঙ্গে কামানের গোলা ছোড়েন। এটিই ছিল তাঁর জীবনের প্রথম কামানের গোলা দিয়ে আক্রমণ। তাঁর উত্কণ্ঠা ছিল, কামান থেকে সঠিকভাবে গোলা নিক্ষিপ্ত হবে কি না। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তিনি তাঁর সহযোগীদের গোলা ছোড়ার নির্দেশ দেন। মুহূর্তের মধ্যে কামান থেকে গোলা উৎক্ষিপ্ত হয়। এরপর ওই কামান থেকে আরও কয়েকটি গোলা ছোড়া হয়। পরে তাঁদের জানানো হয়, সঠিক স্থানে গোলা পড়েছে এবং নিক্ষিপ্ত গোলায় অসংখ্য পাকিস্তানি সেনা হতাহত ও ছিন্নভিন্ন হয়েছে। পরে তাঁরা সিলেট অভিমুখে রওনা দেন। ৭ ডিসেম্বর সিলেটের কাছাকাছি পৌঁছে সিলেট শহরের দিকে কামান তাক করে সাইফউদ্দীন ও তাঁর সহযোদ্ধারা গোলাবর্ষণ করেন।
সাইফউদ্দীন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গোলন্দাজ ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৩১ জানুয়ারি থেকে ছুটিতে ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি প্রতিরোধযুদ্ধে যোগ দেন। এ সময় তিনি আহত হন। সুস্থ হয়ে জুন মাসের শেষে ভারতে যান। ৪ নম্বর সেক্টরের কুকিতল সাব-সেক্টরে যাওয়ার পর তাঁকে মুক্তিবাহিনীর আর্টিলারি ইউনিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা: খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা, প্রথম খণ্ড, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা ২০১২
সম্পাদক: মতিউর রহমান, সংগ্রহ ও গ্রন্থনা: রাশেদুর রহমান
Also Read
-
খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেওয়ার তারিখ আরও পেছাচ্ছে
-
মেসিরা গ্রুপে পেয়েছেন আলজেরিয়া, অস্ট্রিয়া ও জর্ডানকে, ব্রাজিলের গ্রুপে কারা দেখে নিন
-
চোখের সামনে সঙ্গীদের মেরে আমাদের ভয় দেখাত
-
যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ছে, তালিকায় থাকতে পারে ৩০টির বেশি দেশ
-
খালেদা জিয়ার জন্য জার্মানির প্রতিষ্ঠান থেকে ভাড়া করে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাচ্ছে কাতার