বীরত্বসূচক খেতাবপ্রাপ্তদের তালিকা
জামাল কবির, বীর প্রতীক
গ্রাম ফাল্গুনকড়া, উপজেলা চৌদ্দগ্রাম, কুমিল্লা।
বাবা সিরাজুল ইসলাম মজুমদার, মা শামসুন নাহার (টুনি)।
স্ত্রী শামিমা ইসলাম। তাঁদের এক মেয়ে।
খেতাবের সনদ নম্বর ৩৩৯। গেজেটে নাম জামাল।
জামাল কবির ১৯৭১ সালে কুমিল্লা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তাতে তিনি কালবিলম্ব না করে যোগ দেন। প্রতিরোধযুদ্ধের পর ভারতের আগরতলায় যান। সেখানে তাঁর পরিচয় হয় ক্যাপ্টেন এ টি এম হায়দারের (বীর উত্তম, পরে লেফটেন্যান্ট কর্নেল এবং ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর নিহত) সঙ্গে। ক্যাপ্টেন হায়দার তাঁকে মুক্তিবাহিনীর গেরিলাদলে অন্তর্ভুক্ত করেন।
প্রশিক্ষণ চলাবস্থায় জামাল কবির কিশোরগঞ্জে যান। তিনি সেখান থেকে ক্যাপ্টেন হায়দারের বাবা-মা ও বোন লেফটেন্যান্ট ডা. সিতারা বেগমকে (বীর প্রতীক, পরে ক্যাপ্টেন) ভারতে নিয়ে যান। প্রশিক্ষণ শেষ করার পর তিনি প্রথম অপারেশন করেন কুমিল্লায়। পরবর্তী সময়ে তিনি নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর কে ফোর্সের চতুর্থ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের হেডকোয়ার্টার্স কোম্পানির অধীনে যুদ্ধ করেন।
জামাল কবির প্রথম অপারেশন করেন ১৯৭১ সালের জুলাই মাসে। এটি ছিল গেরিলা অপারেশন। তাঁরা ছিলেন কয়েকটি উপদলে বিভক্ত। তাঁর সহযোদ্ধা ছিলেন বাহার উদ্দিন রেজা (বীর প্রতীক), সাকি চৌধুরী ও তাহের নামে একজন। তাঁরা অত্যন্ত সাহসের সঙ্গে শহরের কেন্দ্রে গ্রেনেড ছোড়েন। প্রচণ্ড শব্দে তা বিস্ফোরিত হয়। প্রায় একই সময়ে অন্যান্য উপদলও বিভিন্ন স্থানে গ্রেনেড ছোড়ে।
প্রতিটি স্থানেই ছিল পাকিস্তানি সেনা বা তাদের সহযোগী। বিস্ফোরিত গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা ও সহযোগী হতাহত হয়। এই অপারেশন ছিল কুমিল্লায় অবস্থানরত পাকিস্তানিদের জন্য বিরাট এক ঝাঁকুনি। কারণ এ সময় কুমিল্লা শহরে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছিল। বিস্ফোরণের শব্দে সেদিন গোটা শহর কেঁপে ওঠে। লোকজন চারদিকে ছোটাছুটি করে নিরাপদ স্থানে যায়। দু-তিন দিন শহর প্রায় জনশূন্য ছিল। তখন অনেক লোক শহর ছেড়ে চলে যায়।
সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা: খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা, দ্বিতীয় খণ্ড, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা ২০১৩
সম্পাদক: মতিউর রহমান, সংগ্রহ ও গ্রন্থনা: রাশেদুর রহমান
Also Read
-
প্রত্যাবর্তনের এক অভূতপূর্ব দৃশ্য
-
আই হ্যাভ আ প্ল্যান: তারেক রহমান
-
তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে কী বললেন নাহিদ, আখতার, হাসনাত ও সারজিস
-
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে তারেক রহমানের দেশে ফেরার খবর, ‘সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী’ বলে উল্লেখ
-
মঞ্চে নির্ধারিত চেয়ারে না বসে প্লাস্টিকের চেয়ারে বসলেন তারেক রহমান