বীরত্বসূচক খেতাবপ্রাপ্তদের তালিকা
এ কে এম ইসহাক, বীর প্রতীক
গ্রাম ধল, বাঘারপাড়া, যশোর।
বাবা মুজিবুর রহমান, মা মাহমুদা খাতুন। স্ত্রী লুত্ফুন্নেছা। তাঁদের ছয় ছেলে।
খেতাবের সনদ নম্বর ২৯৯।
মৃত্যু ২০১০।
প্রকৌশলী এ কে এম ইসহাক ১৯৭১ সালে কর্মরত ছিলেন রাঙামাটি জেলার চন্দ্রঘোনায় কর্ণফুলী পেপার মিলে। ২৫ মার্চের আগেই সেখানে তাঁর নেতৃত্বে গঠিত হয়েছিল সংগ্রাম কমিটি ও ছাত্র-যুবকদের নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। চন্দ্রঘোনার কর্ণফুলী পেপার মিল এবং রেয়ন মিলের নিরাপত্তা বিভাগে ছিল দেড় শতাধিক থ্রি নট থ্রি রাইফেল ও বন্দুক। এ কে এম ইসহাক ২৬ মার্চ সেসব অস্ত্র প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে বিতরণ করেন। তারপর ২৭ মার্চ কাপ্তাইয়ের মদনা ঘাটে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধাদের দলনেতা লেফটেন্যান্ট মাহফুজুর রহমানের (বীর বিক্রম, পরে মেজর) সঙ্গে দেখা করে যুদ্ধে যোগ দেন।
ইসহাক তাঁর স্বেচ্ছাসেবক দল নিয়ে অবস্থান নেন মদনা ঘাট ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যবর্তী স্থানে। এপ্রিলে তিনি বেশ কয়েকটি যুদ্ধে অংশ নেন। ১৩ এপ্রিল কালুরঘাটের পতন হলে তিনি তাঁর দল নিয়ে সমবেত হন খাগড়াছড়িতে। সেখানে আলোচনায় স্থির হয়, মেজর মীর শওকত আলীর (বীর উত্তম, পরে লেফটেন্যান্ট জেনারেল) সার্বিক কমান্ডে মুক্তিযোদ্ধারা মহালছড়িতে অবস্থান নিয়ে রাঙামাটি-বরকল ও রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক এলাকায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে প্রতিরোধ করবেন। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়কে পাকিস্তানি সেনাদের প্রতিরোধ করার দায়িত্ব পড়ে এ কে এম ইসহাকের ওপর। তিনি তাঁর দল নিয়ে এ সড়কে বেশ কয়েকবার অ্যামবুশ করেন। এতে হতাহত হয় বেশ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা।
২৭ এপ্রিল মহালছড়িতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর কমান্ডো দল ও তাদের সহযোগী সশস্ত্র মিজোদের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখযুদ্ধ হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর ক্যাপ্টেন আফতাবুল কাদেরসহ (বীর উত্তম) কয়েকজন শহীদ হন। ইসহাক ও তাঁর দলের মুক্তিযোদ্ধারা এ যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের সহযোগী সশস্ত্র মিজোদের অনেককে হতাহত করতে সক্ষম হন। পাকিস্তানি সেনা ও সশস্ত্র মিজোদের সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় তাঁরা রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক থেকে রামগড়ে এসে অবস্থান নেন। ২ মে প্রচণ্ড যুদ্ধ হয় সেখানে। মুক্তিযোদ্ধারা প্রাণপণ চেষ্টা করেও রামগড় ধরে রাখতে ব্যর্থ হন। এর মধ্য দিয়ে শেষ হয় ইসহাকের মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্ব।
এরপর ইসহাক চলে যান ভারতে। সাবরুম থেকে সাত কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে হরিণা নামের পাহাড়ি এলাকায় ক্যাম্প স্থাপন করেন। সেই ক্যাম্পই পরে ১ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টারে রূপ নেয়। জুলাইয়ে মুক্তিবাহিনীর সদর দপ্তর থেকে এ কে এম ইসহাককে ১ নম্বর সেক্টরের কোয়ার্টার মাস্টার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।
সূত্র: একাত্তরের বীরযোদ্ধা: খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা, প্রথম খণ্ড, প্রথমা প্রকাশন, ঢাকা ২০১২
সম্পাদক: মতিউর রহমান, সংগ্রহ ও গ্রন্থনা: রাশেদুর রহমান
Also Read
-
এলএনজি সরবরাহকারী কোম্পানির নতুন তালিকা করছে সরকার
-
আসিফ নজরুলকে হেনস্তার প্রতিবাদে মশালমিছিল
-
মুসলিম-বৌদ্ধ-হিন্দু-খ্রিষ্টান, সবাই মিলে সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে চাই: সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান
-
৫ আগস্টের পর আরেকটি বিপ্লব হবে, সেটি হবে ইসলামি বিপ্লব: গোলাম পরওয়ার
-
ট্রাম্পের জয়ের পর ১০ ধনকুবেরের সম্পদ বেড়েছে ৬৪০০ কোটি ডলার